ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩ ১০:৫৫ এএম
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৩ ১১:৪২ এএম
ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের ওড়িশায় শুক্রবার (২ মে) তিন ট্রেনের সংঘর্ষের ফলে হওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৬৫০ জন। যদিও আগে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনেই ৯০০ জন আহতের কথা বলা হয়েছিল। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
দেশটির কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন, ২০ বছরেরও বেশি সময়ের সময়ের মধ্যে ভারতে এটিই সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি বলেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। আমরা তদন্তের পরেই বিস্তারিত জানতে পারব। এ ছাড়া রেল পুনরুদ্ধার কাজও অবিলম্বে শুরু হবে। তার জন্য কর্মী ও সরঞ্জাম প্রস্তুত রয়েছে। তবে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা।’
যারা এ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, তাদের পরিবারের জন্য ১০ লাখ টাকা, যারা গুরুত্বর আহত হয়েছেন তাদের জন্য ২ লাখ টাকা এবং যারা সামান্য আহত হয়েছেন, তাদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী।
উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে এবং আশপাশের জেলাগুলোর সব হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ওড়িশার মুখ্য সচিব প্রদিপ এনডিটিভকে জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগের কর্মী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ছাড়াও ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে ২০০ পুলিশ সদস্য, ৩০ জন ডাক্তার। আহতদের হাসপাতালে নিতে ৬০টি অ্যাম্বুলেন্স কাজ করছে।
ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
এর আগে কলকাতা থেকে চেন্নাই যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে একটি মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয় এটি।
মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেওয়ায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটির প্রথম তিনটি বগি ছাড়া বাদবাকি বগি লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন উঠে যায় মালবাহী ট্রেনের ওপর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটবার্তায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক গভীর প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া আহতদের পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশনাও দেন তিনি।
ভারতের আন্তঃরাজ্য যোগাযোগের জন্য ট্রেন খুবই জনপ্রিয়। তবে তাদের রেলযাত্রার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক ট্র্যাজেডি। ১৯৮১ সালের জুনে বাগমতী নদীতে ট্রেন ছিটকে পড়ে ৯০০ জন নিহত হয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালের আগস্টে পশ্চিমবঙ্গে ব্রহ্মপুত্র মেইল নামে ট্রেন লাইনচ্যুৎ হয়ে দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০০ জন নিহত হয়েছিলেন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে ইন্দর-পাটনা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ১৫০ জন এবং ২০১৭ সালের আগস্টে মুজাফফরনগরে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ২৩ জন নিহত হন। এ ছাড়া ভারতজুড়ে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার কথা শোনা যায়।
সূত্র : এনডিটিভি