ঘূর্ণিঝড় মোখা
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৩ ০৯:৩৮ এএম
আপডেট : ২৪ মে ২০২৩ ১৩:২২ পিএম
কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্র। ছবি : সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য জাতিসংঘ ও তার অংশীদাররা দাতাদের কাছে ৪ কোটি ২১ লাখ ডলারের জন্য আবেদন করেছে। মঙ্গলবার (২৩ মে) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক বৈঠকে এ আবেদন করা হয়। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের ৩৩টি শরণার্থী শিবির ও আশপাশের গ্রামগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
যে অর্থটা চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যয় করা হবে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। আর টেকনাফের স্থানীয়দের জন্য ৫৬ লাখ ডলার।
এ আবেদনে জরুরি চাহিদা পূরণ, বর্ষার আগে প্রস্তুতি এবং জীবন বাঁচানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ আশ্রয়ণ ও সেবাকেন্দ্রগুলোর জন্য বৈরী আবহাওয়া এবং আগুন প্রতিরোধক উপকরণ ব্যবহারের বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে।
১৪ মে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। ঘূর্ণিঝড়ে লাখ লাখ বাংলাদেশি ও আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত ও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।
আরও অনেকে বিশুদ্ধ পানি এবং অন্য স্যানিটেশন সুবিধার সুযোগ হারিয়েছেন। এ ছাড়া শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা এবং অন্য সুবিধাকেন্দ্রগুলোও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশি ও শরণার্থী জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আমাদের যা করতে হবে তা হলো, স্থাপনাগুলো বৈরী আবহাওয়া এবং অগ্নিপ্রতিরোধক উপকরণ দিয়ে আরও ভালোভাবে তৈরি করা।
জানা গেছে, চলতি বছর রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বিশেষ ঝুঁকিতে রয়েছেন, কারণ ২০২৩ সালে ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত মাত্র ১৭ শতাংশ অর্থায়নের অঙ্গীকার পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় তহবিল ঘাটতির কারণে বছরের মার্চ ও জুন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো রেশন কমানোর ফলে খাদ্যসহায়তা ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ হ্রাস পাবে। অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ও কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
শরণার্থীদের কাজ করার সুযোগ নেই এবং তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল উল্লেখ করে লুইস বলেন, শরণার্থীদের সম্পূর্ণ খাদ্য, রেশন নিশ্চিত করতে ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রয়োজন। এখন ঘূর্ণিঝড়ের পরে ক্যাম্পগুলোর পুনর্গঠন এবং বর্ষার প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত সহায়তাও প্রয়োজন।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় মানুষের জীবন রক্ষায় দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং সাড়াদানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন লুইস।
মিয়ানমারের মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোও ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৬ লাখ মানুষের সহায়তায় মঙ্গলবার ৩৩ কোটি ৩ লাখ ডলারের আবেদন করেছে।
সূত্র : ইউএনবি