প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৩ ১৬:৪১ পিএম
আপডেট : ১৩ মে ২০২৩ ১৬:৪৯ পিএম
শিল্পীর চোখে কৃষ্ণগহ্বরের গ্যাস শুষে নেওয়ার দৃশ্য। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই ঘটেছে বিস্ফোরণ। ছবি : সংগৃহীত
প্রবল মহাজাগতিক বিস্ফোরণের খোঁজ পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ বলে মনে করা হচ্ছে একে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নক্ষত্রের বিস্ফোরণ বা সুপারনোভার চেয়েও এটির উজ্জ্বলতা ১০ গুণ বেশি। তিন বছর ধরে বজায় রয়েছে সে উজ্জ্বলতা। সাধারণত সুপারনোভার আলো যত দিন থাকে, তার চেয়ে অনেক বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, বেশিরভাগ সুপারনোভা সাধারণত কয়েক মাস দৃশ্যত উজ্জ্বল থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঘটনা ভিন্ন। বড় মাপের ওই বিস্ফোরণ কী কারণে ঘটেছে, সেটির একটি ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে, কৃষ্ণগহ্বর ব্যাপক পরিমাণে গ্যাস শুষে নেওয়ায় এ রকমটি হয়ে থাকতে পারে।
২০২০ সালে ওই বিস্ফোরণের আলোর ছটা আকাশে দেখা গিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেছে বিবিসি। সে ঘটনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ডও হয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার জুইকি ট্রানসিয়েন্ট ফ্যাসিলিটিতে। কিন্তু সে সময় এ ব্যাপারে কেউ জানত না। মূল ঘটনার এক বছর পর তথ্য-উপাত্ত ঘাঁটতে গিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর খোঁজ পান। গোটা ঘটনাকে ‘এটি২০২১আইডব্লিউএক্স’ নাম দিয়েছেন তারা।
শুরুতে এটিকে অনুল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হয়েছিল। কারণ কত দূরে ঘটনাটি ঘটেছে তা আন্দাজ করতে পারছিলেন না বিজ্ঞানীরা। ফলে এর উজ্জ্বলতাও পরিমাপ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছর ওই ঘটনা থেকে উৎসারিত আলো বিশ্লেষণ করে ইউনিভার্সিটি অব সাউথহ্যাম্পটনের ডক্টর ফিলিপ ওয়াইজম্যান নেতৃত্বাধীন দল। পরে ওই বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দূরত্ব বের করেন তারা। জানা যায়, ৮০০ আলোকবর্ষ দূরে বিস্ফোরণ হয়েছে।
এত উজ্জ্বলতা কেন তৈরি হয়েছে এবং কীভাবে ওই উজ্জ্বলতা এত দিন ধরে বজায় রয়েছে, তা প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না ওয়াইজম্যান ও তার দল। আগের কোনো গবেষণাতেও এ রকম কোনো ঘটনার উল্লেখ ছিল না। পরে তারা বুঝতে পারেন এটি নতুন কোনো ঘটনা।
সব ছায়াপথের কেন্দ্রেই বড় কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ওয়াইজম্যানের বিশ্বাস, এ ধরনের শক্তিশালী বিস্ফোরণ ছায়াপথের কেন্দ্র গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির উপনির্বাহী পরিচালক ডক্টর রবার্ট ম্যাসে জানিয়েছেন, এ ধরনের আরও বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে এখন। তিনি বলেন, ‘আমরা এর আগে কখনও এ রকম কিছু দেখিনি। অন্তত এ রকম মাত্রার তো নয়ই।’ সূত্র : বিবিসি