প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ১২:১১ পিএম
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৪২ পিএম
আরএসএফ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় খার্তুমের বাসিন্দারা পালিয়ে যাওয়ার জন্য বুধবার একটি স্টেশনে জড়ো হন। ছবি : আলজাজিরা
সুদানের রাজধানী খার্তুমে দেশটির সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর খাদ্যের ঘাটতি এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিদেশি রাষ্ট্রগুলো তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। কিন্তু ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। সর্বশেষ খার্তুমে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবারও লড়াই হয়েছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতা হিবা মরগান বলেছেন, ‘আমরা এখনও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সামরিক বাহিনীর সাধারণ কমান্ডের আশপাশে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি।’
ওই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে বিবদমান দুই বাহিনী একে অন্যকে দায়ী করেছে।
এদিকে পাশের দেশ চাদের সশস্ত্র বাহিনী ৩২০ সুদানি সেনাকে নিরস্ত্র করেছে, যারা সোমবার দেশটির ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল।
চাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাউদ ইয়ায়া ব্রাহিম বলেছেন, চাদ সংঘাতে জড়িত হতে চায় না।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আজ হাজার হাজার শরণার্থী সুরক্ষার জন্য আমাদের সীমান্ত অতিক্রম করছে। তাদের স্বাগত জানানো এবং রক্ষা করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই।’
খার্তুমের বাসিন্দারা সুদানের দক্ষিণে চলে গেছেন, যেখানে যুদ্ধের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে খার্তুমে বাড়িতে আটকে থাকা বাসিন্দারা বিদ্যুতের বিচ্ছিন্নতার কারণে এ গরমে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। খাদ্য সরবরাহ কতক্ষণ স্থায়ী হবে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।
খাবার খুঁজতে থাকা স্থপতি হাদিল মোহাম্মদ বলেছেন,‘আজ আমাদের কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস শেষ হতে শুরু করেছে।’ জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল এবং জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, যুদ্ধের ফলে ইয়েমেনে বিশ্ব সংস্থার কাজ ‘সম্পূর্ণভাবে বন্ধ’ হয়ে গেছে।
গ্রিফিথস আলজাজিরাকে বলেন, ‘মানুষ নড়ছে না, সরবরাহ লুট করা হয়েছে এবং আমরা জানি না কী স্টক বাকি আছে।’
তিনি বলেন, রমজানের রোজার শেষে ঈদের কাছাকাছি সময়ে ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে দেশজুড়ে মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট পাচ্ছে।
সুদানের সেনাবাহিনী খার্তুমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করে। তারা র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) যোদ্ধাদের সরবরাহের পথ বন্ধ করার চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং বাসিন্দাদের মতে, ইথিওপিয়ার পূর্ব সীমান্তের কাছাকাছি থেকে সেনাশক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আরএসএফ অভিযোগ করে জানিয়েছে, সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে জাবরার বাড়িগুলোর বিরুদ্ধে ভারী কামান ব্যবহার করেছে।
আগের দিন খার্তুমে সেনা সদর দপ্তরের চারপাশে ক্রমাগত বোমাবর্ষণ শোনা যায়, যেখানে সুদানের সামরিক শাসক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সপ্তাহের শুরুতে অবস্থান করেছিলেন। তিনি এখনও সেখানে আছেন কি না স্পষ্ট নয়।
দেশটির সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সশস্ত্র বাহিনী জেনারেল কমান্ডের আশপাশে একটি নতুন আক্রমণের জবাব দিচ্ছে।’
রয়টার্স নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিম খার্তুমের জাবরায় আরেকটি ভারী গুলি বিনিময় হয়েছে, যেখানে আধাসামরিক বাহিনী নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর পারিবারিক বাড়ি রয়েছে।
যদিও শনিবার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হেমেদতির অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি।
দেশটির প্রধান বিমানবন্দর দখলের তীব্র লড়াইয়ের কারণে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা