প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০০ পিএম
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ১১:২৮ এএম
আরএসএফ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় খার্তুম বিমানবন্দরের ভেতরে জ্বলন্ত বিমান থেকে ধোঁয়া উঠছে। ছবি : রয়টার্স
আন্তর্জাতিকভাবে মধ্যস্থতাকারী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই সুদানে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে দেশটির রাজধানী শহর খার্তুম।
ওই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে বিবাদমান দুই বাহিনী একে অপরকে দায়ী করেছে।
এদিকে. ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বলেছে, রাজধানীর আশেপাশে মানবিক পরিষেবা প্রদান করা প্রায় অসম্ভব। সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে, সুদানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
বিবাদমান দুই জেনারেলদের অনুগত বাহিনী রাজধানী খার্তুমের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের দখলের জন্য লড়াই করছে বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকাল ৬টা যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার সম্মত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই জোরেসোরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বিবৃতি জারি করে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতিকে সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।
সেনাবাহিনীর হাইকমান্ড বলেছে, তারা রাজধানী এবং অন্যান্য অঞ্চলকে নিরাপদ করতে অভিযান চালিয়ে যাবে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিউইয়র্কে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘আমরা এখানে যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত পাইনি।’
সুদানের সামরিক নেতা এবং সুদানের শাসক পরিষদে তার সহকারীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চার দিন আগে শুরু হয়েছিল।
যুদ্ধটিকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতন বলে পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয় হিসাবে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তাদের তিনজন কর্মী নিহত হওয়ার পর সেখানে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
জাতিসংঘের মতে, সংঘর্ষে অন্তত ১৮৫ জন মারা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন গত মঙ্গলবার জাপানে এক বক্তৃতায় বলেছেন, তিনি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী নেতা তথা সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোকে টেলিফোন করেছেন। তিনি উভয় পক্ষের প্রতি যুদ্ধবিরতির আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, উভয় পক্ষই আল জাজিরাকে জানিয়েছে যে, তারা যুদ্ধবিরতি সমর্থন করেছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল খালেদ আল-আকিদা বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে এবং শহরে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী। কিন্তু আরএসএফ এমন একটি মিলিশিয়া, যারা কোনো কিছুকেই সম্মান করে না।’
অন্যদিকে, আরএসএফ বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ বহাল রাখবে।
আরএসএফের কমান্ডারের উপদেষ্টা মুসা খাদ্দাম আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘খার্তুমের বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা আমাদের বাহিনী যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আল-বুরহান ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান এবং ২০১৯ সালে আল-বশিরকে অপসারণের পরে সুদানের শাসনভার গ্রহণ করেন।
সূত্র : আলজাজিরা