প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১২:১২ পিএম
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১২:১৬ পিএম
সংঘর্ষের মধ্যে গত রবিবার সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানের অনুগত সেনাদের লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহর পোর্ট সুদানে অভ্যর্থনা জানায় স্থানীয়রা। ছবি : গালফ নিউজ
সুদানজুড়ে তৃতীয় দিনের মতো ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সেখানকার সেনাবাহিনী এবং র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে একটি আধাসামরিক গোষ্ঠীর মধ্যে সহিংসতা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
চলমান সংঘর্ষে এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সুদানের চিকিৎসকদের একটি সংগঠন।
তারা জানিয়েছে, অব্যাহত সংঘর্ষে আনুমানিক আহতের সংখ্যা ১ হাজার ১০০ জন।
উভয় পক্ষই রাজধানী খার্তুমের মূল অবকাঠামোগুলো নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে।
এর আগে গত রবিবার সংঘর্ষে আহতদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল।
এদিকে, চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘খার্তুমের হাসপাতালের পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। ফের লড়াই শুরু হওয়ার ফলে আহতদের কাছে চিকিৎসক এবং ওষুধ সরবরাহ করা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
সুদানের ক্ষমতা দখলের বাসনা থেকেই সংগঠিত আরএসএফ নামে একটি আধাসামরিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্বই সহিংসতায় পরিণত হয়েছে।
একদিকে, দেশটির সামরিক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অনুগত সেনা ইউনিট এবং অপরদিকে সুদানের ডেপুটি লিডার মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে কুখ্যাত আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে মূলত ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্ব থেকেই ওই সংঘর্ষ ঘটেছে বলে জানা গেছে।
২০১৯ সালে দেশটির দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে সুদান সামরিক সরকার তথা জেনারেলদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
গত রবি এবং সোমবারের (১৭ এপ্রিল) সকালের দিকে রাজধানী খার্তুমের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, এবং পাশের শহর ওমদুরমান, দেশের উত্তরের দারফুর এবং পশ্চিমাঞ্চলে মেরোওয়ে বিমানবন্দর দখল করার দাবি করেছে আরএসএফ।
কিন্তু, কিছু বিষয় ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, সেনাবাহিনী বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। দেশটির সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ছোট ছকে আরএসএফকে মোকাবিলা করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী বিমান হামলার মাধ্যমে আরএসএফ ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করেছে বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে, খার্তুমের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা গুলি ও বিস্ফোরণের কারণে ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
খার্তুমের বাসিন্দা হুদা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি। গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে ঘর কাঁপার কারণে আমরা গত ২৪ ঘণ্টা ঘুমাইনি। আমরা ডায়াবেটিক আক্রান্ত বাবার পানি, খাবার এবং ওষুধ ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত।’
খার্তুমের আরেক বাসিন্দা খুলুদ খায়ের বিবিসিকে বলেন, ‘বাসিন্দারা কোথাও নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না। সমস্ত বেসামরিক নাগরিকদের বাড়িতে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে, কিন্তু, সেটি সবাইকে নিরাপদ রাখতে পারেনি।’
সূত্র : বিবিসি