প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৬ এএম
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:০৮ পিএম
ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জোরদার করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি : সংগৃহীত
যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়িয়ে ‘পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে’ নিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে অভিযুক্ত করেছে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, ‘আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের’ মাধ্যমে ওই যৌথ মহড়ার জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে পিয়ংইয়ং।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) কেসিএনএর বিবৃতিতে সমালোচনা করে বলা হয়েছে, অব্যাহত মহড়া ‘কোরীয় উপদ্বীপে পরিস্থিতি বিস্ফোরণের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ।’
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক চো জু হিয়নের একটি নিবন্ধ থেকে উদ্ধৃত করে কেসিএনএ জানিয়েছে, ‘ডিপিআরকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অনুসারীদের বেপরোয়া সামরিক সংঘাতমূলক আচরণ কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি একটি অপরিবর্তনীয় বিপর্যয়কর পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।’
ডিপিআরকে হলো উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপ।
কেসিএনএ জানিয়েছে, ‘এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সর্বসম্মতভাবে আশা করে যে কোরীয় উপদ্বীপের ওপর ঝুলে থাকা পারমাণবিক যুদ্ধের কালো মেঘ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপসারণ করা হবে।’
ইউএস এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনী মার্চ থেকে বার্ষিক বসন্তকালীন অনুশীলনের একটি সিরিজ পরিচালনা করছে। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরি ও বি-১বি এবং বি-৫২ বোমারু বিমান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বুধবার এক মাসের মধ্যে উপদ্বীপে প্রথম ব্যবহারের জন্য তাদের বি৫২এস যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছিল।
বিবৃতিতে ইউএসএস নিমিৎজ বিমানবাহী জাহাজের সম্পৃক্ততাকে সংঘাত সৃষ্টির লক্ষ্যে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘পিয়ংইয়ং আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ হিসেবে যুদ্ধপ্রতিরোধ অনুশীলনের মাধ্যমে মহড়ার প্রতিক্রিয়া জানাবে।’
প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়া এ ধরনের মহড়াকে আক্রমণের মহড়া হিসেবে দেখে।
পিয়ংইয়ং গত বছর রেকর্ডসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় তার সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে।
এটি নতুন ছোট পারমাণবিক ওয়ারহেড উন্মোচন করেছে এবং দীর্ঘতম পাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এটি একটি সাবমেরিন থেকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও নিক্ষেপ করেছে।
একটি পৃথক বিবৃতিতে জেনেভায় উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি হ্যান টে সং দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এ সপ্তাহে গৃহীত একটি বার্ষিক প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা করেছেন।
ভোট ছাড়াই গৃহীত ওই প্রস্তাবটিকে ‘রাজনৈতিক উস্কানি ও শত্রুতার অসহনীয় কাজ’ এবং ‘প্রতারণার সবচেয়ে ভারী রাজনৈতিক দলিল’ বলে অভিহিত করেছেন হান।
উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার সম্পর্কিত ২০১৪ সালে জাতিসংঘ প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তাপ্রধানদের এবং সম্ভবত নেতা কিম জং উনকে নাৎসি শৈলীর নৃশংসতার একটি রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার তত্ত্বাবধানের জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র কিমকে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
সূত্র : আলজাজিরা