× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

যুক্তরাষ্ট্রের হাইপারসনিক অস্ত্রে ব্যর্থতা

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৪ এএম

আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫০ এএম

কয়েকটি এআরআরডব্লিউয়ের পরীক্ষা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর মার্কিন বিমানবাহিনী ‘লকহিড মার্টিন এআরআরডব্লিউ’ প্রকল্প বাতিল করে। ছবি : সংগৃহীত

কয়েকটি এআরআরডব্লিউয়ের পরীক্ষা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর মার্কিন বিমানবাহিনী ‘লকহিড মার্টিন এআরআরডব্লিউ’ প্রকল্প বাতিল করে। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী (ইউএসএএফ) তার এয়ার-লঞ্চড র‍্যাপিড রেসপন্স ওয়েপন (এআরআরডব্লিউ) প্রকল্প বাতিল করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের হাইপারসনিক অস্ত্র কর্মসূচির ওপর সর্বশেষ আঘাত। চীন ও রাশিয়া ইতোমধ্যেই হাইপারসনিক অস্ত্র তৈরির মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুবিধা তৈরি করে নিয়েছে।

মার্কিন বিমানবাহিনীর (ইউএসএএফ) এ ব্যর্থতার খবর এমন একটি সময়ে এলো, যখন চীন ও রাশিয়া এ ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে। ২০২১ সালে চীন হাইপারসনিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হতবাক করে দেয়। চীনের তৈরি ওই মিসাইলটি পুরো পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে। এর গতি এতই বেশি যে, কোনো রাডারের পক্ষেই এটি শনাক্ত করা সম্ভব নয়।

এসব অত্যাধুনিক অস্ত্রে ব্যবহৃত হয় উন্নত প্রযুক্তির চিপ বা প্রসেসর, যা যুক্তরাষ্ট্রেরই তৈরি। এর ফলে গত বছরের শেষদিকে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে উন্নত প্রযুক্তির চিপ ও চিপ তৈরির সরঞ্জাম চীনে রপ্তানির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাইডেন প্রশাসন। এর মধ্যে হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার খবর পাওয়া গেল।

গত মার্চে মার্কিন প্রকাশনা ওয়ারজোন এক প্রতিবেদনে জানায়, কয়েকটি এআরআরডব্লিউয়ের পরীক্ষা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর মার্কিন বিমানবাহিনী ‘লকহিড মার্টিন এআরআরডব্লিউ’ প্রকল্প বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর বদলে রেথিয়নের হাইপারসনিক অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইলে (এইচএসিএমস) মনোযোগ দেবে তারা।

প্রতিবেদনে মার্কিন বিমানবাহিনীর অধিগ্রহণ বিভাগের সহকারী সচিব অ্যান্ড্রু হান্টার জানান, তারা আর এআরআরডব্লিউ নিয়ে এগোবেন না। শেষ যে দুটি নমুনা ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, সেগুলো হাইপারসনিক ফ্লাইট ডেটা সংগ্রহের জন্য নিক্ষেপ করা হবে। এআরআরডব্লিউ সংক্রান্ত আর কোনো কার্যক্রমে হাত দেওয়া হবে না। 

গত মাসে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে (এসসিএমপি) যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কথা প্রকাশ পায়। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল থেকে এআরআরডব্লিউ সফলভাবে বি-৫২এইচ বম্বারের মাধ্যমে উৎক্ষেপিত হয়েছিল। বুস্টার থেকে সফলভাবে এটির ওয়ারহেডও বিচ্ছিন্ন হয়ে উড্ডয়ন অব্যাহত ছিল। কিন্তু বাস্তব সময়ে ডেটা আদান-প্রদান করার লিংকটি ব্যর্থ হয়। এ কারণে এআরআরডব্লিউর ফ্লাইটের বৈশিষ্ট্য সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত পেন্টাগন পায়নি। উৎক্ষেপণ দল বর্তমানে ওই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করছে। তারা বোঝার চেষ্টা করছে ডেটা লিংকের সমস্যার কারণে এরকম হয়েছে, নাকি এআরআরডব্লিউ ওয়ারহেডে ত্রুটির কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে। 

মোট চারটি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে দ্বিতীয় পরীক্ষা ছিল সেটি। মূলত এ চার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, আদৌ এটির উৎপাদনে হাত দেওয়া হবে কি না। 

এআরআরডব্লিউর প্রথম পরীক্ষাটি সফল হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে এ পরীক্ষা হয়। ওই পরীক্ষা সফল হলেও উৎক্ষেপণের সময় বেশ কয়েকবার সমস্যার মুখে পড়েছিল সেটি। এসব ব্যর্থতার নেপথ্যে কী তার কারণ স্পষ্ট নয়। হতে পারে নকশার ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে। আবার হতে পারে হাইপারসনিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় সমস্যা রয়েছে।

গত বছরের জুলাইয়ে এশিয়া টাইমস জানায়, অস্ত্রের জটিল নকশার কারণ এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী হতে পারে। এ ছাড়া চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাড়াহুড়ো করার কারণও এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী হতে পারে। সব মিলিয়ে দুর্বল নকশা, স্বল্প পরীক্ষা পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, উৎক্ষেপণপূর্ব পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ফাঁক রয়ে যাওয়া, সরকারের তত্ত্বাবধানের অভাব- সবই ভূমিকা রেখেছে ব্যর্থতার পেছনে। 

সামরিক সাময়িকী এয়ার অ্যান্ড স্পেস ফোর্স জানিয়েছে, মার্কিন বিমানবাহিনী দুটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কাজ করছে, যার একটি এআরআরডব্লিউ এবং আরেকটি এইচএসিএম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিমানবাহিনী এইচএসিএম কর্মসূচিতেই বেশি মনোনিবেশ করবে বলেও উল্লেখ করেছে ওই সাময়িকীটি। 

এইচএসিএমের কিছু সুবিধার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। যেমন সেটি আকারে ছোট, যার কারণে এগুলো আরও অনেক ধরনের যুদ্ধবিমানের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া সম্ভব হবে। অন্যদিকে এআরআরডব্লিউকে শুধু বোমারু বিমানে করেই পাঠাতে হয়।

এইচএসিএম তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠতে পারে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানকে হাইপারসিনক পরীক্ষার জন্য উচ্চগতির যুদ্ধবিমান তৈরি করে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। 

ইউক্রেনের ওপর বোমাবর্ষণের অংশ হিসেবে ইউএসএর বারবার উন্নত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার পশ্চিমাদের বেশিরভাগ মনোযোগ পেতে পারে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, চীনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় হাইপারসনিক অস্ত্রাগার রয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে বোমাবর্ষণের অংশ হিসেবে রাশিয়া হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহার করলে তা পশ্চিমাদের মনোযোগ কাড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, হাইপারসনিক অস্ত্রের দিক থেকে চীনই বিশ্বের শীর্ষে। 

সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রধান বিজ্ঞানী আইন প্রণেতাদের বলেছেন, ‘যদিও চীন ও রাশিয়া উভয়ই হাইপারসনিক অস্ত্রের অসংখ্য সফল পরীক্ষা চালিয়েছে, তবে চীনই এ অস্ত্রের দিক থেকে শীর্ষে। গত দুই দশক ধরে চীন পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির বিকাশকে নাটকীয়ভাবে এগিয়ে নিয়েছে।’

এ অস্ত্রের গতি শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, এ উচ্চগতির অস্ত্রকে শনাক্ত করা কঠিন। তাই এটিকে প্রতিরোধ করাও কঠিন। 

সূত্র : এশিয়া টাইমস

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা