× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

যেখানে মতের অমিল শি-পুতিনের

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ১০:৪৫ এএম

আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ১০:৫৭ এএম

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

মস্কোতে গত মাসে সাক্ষাৎ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অনেক কিছুতেই তাদের মধ্যে মতের মিল রয়েছে। তবে অমিলও রয়েছে। যেমন- পারমাণবিক ইস্যু রাশিয়ার সঙ্গে একমত হতে পারছে না চীন।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হুমকি দেওয়ার কারণে রাশিয়াকে সতর্কতামূলক তিরস্কারও করেছে দেশটি। 

পুতিন বিভিন্ন সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক হুমকি দিয়েছে। অথচ তাকেই পরে দেখা যায় শির উপস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার এক যৌথ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করতে। সেটিতে চীন ও রাশিয়া একমত হয় যে ‘সব পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রর বিদেশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা থেকে বিরত থাকা উচিত।’

কিন্তু শি মস্কো ছাড়তে না-ছাড়তেই পুতিন ঘোষণা দিলেন বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের। চীন খুব দ্রুতই প্রতিক্রিয়া জানাল এর। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাও নিঙ গত ২৭ মার্চ বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের বললেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে সব পক্ষের উচিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় মনোনিবেশ করা এবং একত্রে এটি নিরসনে কাজ করা।

গোটা বিষয়টি ইউক্রেন নীতির চুক্তি প্রশ্নে ইউক্রেন ও রাশিয়ার অন্তর্নিহিত অসঙ্গতির অস্বাভাবিক একটি নজির। চীন নিজেকে শান্তির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আগ্রহী, যুদ্ধে উসকানিদাতা হিসেবে নয়।

এদিকে পুতিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে ইউক্রেনকে অস্তিত্বের সংকট হিসেবে দেখে রাশিয়া এবং এর ইতি অবশ্যই টানতে হবে। এসব কারণে মাঝেমধ্যেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় শিকে। তিনি ক্রমাগত দুই পক্ষের ‘সীমাহীন’ সম্পর্কের বুলি আওড়ালেও গোটা সম্পর্ককে নিজের মূল বৈদেশিক নীতির সীমার মধ্যে রাখতে চাইছেন। 

মস্কো সম্মেলনের এক মাস আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২ দফার একটি শান্তি পরিকল্পনা উত্থাপন করে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিল সার্বভৌমত্ব। কিন্তু মস্কোতে শি বা পুতিন কেউই সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলাপ করেননি। এমনকি তাদের কোনো যৌথ বিবৃতিতেও ছিল না শব্দটি। 

পুতিন নিজেও খোলাখুলিভাবেই বলেছেন, পরিকল্পনার কিছু অংশ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে তিনি কোন অংশগুলোর কথা বলেছেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাননি। এ ছাড়াও তিনি মেনে নিয়েছেন যে সে প্রস্তাবে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যার ভিত্তিতে এটি নিয়ে সামনে আগানো যায়। এক্ষেত্রে রুশ প্রেসিডেন্ট শর্ত দিয়েছেন যে পশ্চিম ও কিয়েভকে প্রথমে ওই প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর করতে হবে।

কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও তা চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ভাঙন ধরাতে পারবে না। বেইজিং এখনও নিজ জনসাধারণকে এত বড় নাটকীয় পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত করে তোলেনি। চীনের গণমাধ্যমে প্রতিনিয়তই প্রচারিত হচ্ছে আমেরিকান একাধিপত্যের বিষোদগার এবং যুদ্ধ তৈরির জন্য তাদের বিরুদ্ধে নানা কথা। চীনের নেতারাও নিজেদের বিবৃতিতে এ বিষয়টি তুলে ধরছেন। 

এ প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনের বৈদেশিক নীতি থিংকট্যাংক স্টিমসন সেন্টারের জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ইয়ুন সান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ চীনকে ভিন্নভাবে রাজি করানোর যত চেষ্টাই করুক না কেন, বেইজিংয়ের দৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চীন ও রাশিয়ার স্বার্থ একত্রীকরণের গুরুত্ব ছোটখাটো স্বার্থের তুলনায় অনেক বড়। যেমন আঞ্চলিক নেতৃত্বের জন্য এবং প্রভাববলয়ের জন্য প্রতিযোগিতা।

সিনো-রাশিয়া সম্মেলনের আগে অন্যরা বলেছিল, মূল মনোযোগ ইউক্রেনের ওপর থাকবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শঙ্কা ছিল, বৈঠকে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র সরবরাহের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে চীন।

দেখা গেছে, দুই দলই ভুল ছিল। ইউক্রেন সংকট দ্বিতীয় ধাপের সমস্যা হিসেবে উত্থাপিত হয়েছে বৈঠকে। ২১ মার্চ সম্মেলনের প্রথম দিনে শি যুদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, চীন সংকটে ইন্ধন জোগানোর বিরুদ্ধে এবং তারা ‘রাজনৈতিক সমঝোতার’ জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। 

কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, যুদ্ধের অবসানে কোনো তাড়া নেই শির। 

কারণ একদিকে এ সংঘাতে মার্কিন সামরিক সম্পদ কমছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের হাতে ইউক্রেনে সরবরাহের মতো যথেষ্ট গোলাবারুদ নেই। অন্যদিকে পশ্চিমা অর্থনীতিতে জ্বালানির দাম বাড়ছে। অথচ সে সময়টিতেই বাজারদরের চেয়েও কম মূল্যে চীন রাশিয়ার তেল পাচ্ছে। 

স্লোভাকিয়ার সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজের গবেষক মার্টিন সেবেনা লিখেছেন, চীন যদি শুধু ধৈর্য ধরে বসে থাকে, তাহলে যে ফলাফলই আসুক না কেন তা আখেরে বেইজিংয়ের কাজে দেবে।

সেবেনা বলেন, চীন শুধু এ যুদ্ধ থেকে সুফলই লাভ করবে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, যদি রাশিয়া পরাজিত হয়, তাহলে তাদের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাবে এবং তা চীনের সঙ্গে জুড়ে যাবে। আর যদি তারা জিতে যায়, তাহলে চীন পশ্চিমের বিনিময়ে পাবে শক্তিশালী এক মিত্র। 

সূত্র : এশিয়া টাইমস  

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা