প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১২:২২ পিএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৫ পিএম
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনকে স্বাগত জানাতে নিউইয়র্কে জড়ো হন তার সমর্থকরা। ছবি : সংগৃহীত
মধ্য আমেরিকায় যাওয়ার পথে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন।
তিনি মধ্য আমেরিকায় যাওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট করছেন। তবে তিনি ফিরতি পথে ইউএস হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন৷
তবে এই ধরনের যেকোনো বৈঠকের নিন্দা করে চীন বলেছে, ওই বৈঠকের কারণে ‘গুরুতর সংঘর্ষ’ হতে পারে।
জবাবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রে ট্রানজিট ‘স্বাভাবিক’ বিষয়। এই বিষয়ে চীনের ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া’ দেখানোর কিছু নেই।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তার মুখপাত্র জন কিরবি গত বুধবার (২৯ মার্চ) জোর দিয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের ট্রানজিট যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, যা স্বশাসিত দ্বীপের ওপর চীনের দাবিকে স্বীকার করে।
তিনি বলেন, “এই ট্রানজিটটি তাইওয়ানের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্কের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের 'এক চীন' নীতির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ওয়াশিংটন সাই ইং-ওয়েনের কাছে একটি স্বাভাবিক ট্রানজিটের আশা করছে৷”
গুয়াতেমালা এবং বেলিজ থেকে ভ্রমণের অংশ হিসেবে সাই ইং-ওয়েন গত বুধবার নিউইয়র্কের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেন এবং এপ্রিলে লস অ্যাঞ্জেলসের মধ্য দিয়ে যাবেন। এর পর ৭ এপ্রিল তাইপেই ফেরার কথা রয়েছে তার।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট এর আগেও ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে গেছেন৷ কিন্তু এবার তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তার ওই বৈঠক বেইজিংয়ের গাত্রদাহের কারণ হয়েছে৷
বেইজিং অবশ্য ওই বৈঠকের বিরুদ্ধে বারবার সতর্ক করেছে। চীনের তাইওয়ান অ্যাফেয়ার্স অফিসের মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান এই সপ্তাহের শুরুতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সাই
যদি মার্কিন হাউসের স্পিকার ম্যাককার্থির সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তবে এটি আরেকটি উসকানি হবে, যা এক চীন নীতিকে গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করবে, চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ক্ষতি করবে এবং তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করি এবং অবশ্যই দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই করার জন্য ব্যবস্থা নেব।’
বেইজিং গত আগস্টে তাইওয়ানের চারপাশে যুদ্ধের মহড়ার আয়োজন করেছিল, যখন তৎকালীন মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইপেই সফর করেছিলেন।
ম্যাককার্থির সঙ্গে সাই-এর সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কিরবি বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের এই ট্রানজিটটিকে তাইওয়ান প্রণালির আশপাশে কোনো কার্যকলাপ বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে এই দ্বীপ রাষ্ট্রের সঙ্গে তার বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্ক রয়েছে।
বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্য সমস্যা, তাইওয়ানের মর্যাদা, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাবের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন চাপসহ অনেক পয়েন্টে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এই বছরের শুরুতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে, এটি একটি চীনা গুপ্তচর বেলুন ছিল, যা তার ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে।
চীন জোর দিয়ে বলেছিল যে, বেলুনটি আবহাওয়াসংক্রান্ত গবেষণার জন্য ওড়ানো হয়েছে। এ পরও সেটিকে ভূপাতিত করে ওয়াশিংটন।
সূত্র : বিবিসি