প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩ ২১:১৬ পিএম
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩ ২১:৪১ পিএম
ইলন মাস্ক। ছবি : সংগৃহীত
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক মঞ্চে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ও বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা, রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানি টুইটারের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। এই আলোচিত ধনকুবের বিশ্বাস করেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসনের জন্য একটি বড় মাথাব্যথা হয়ে উঠছেন ইলন মাস্ক। বিশ্বের অন্যতম এই শীর্ষ ধনী কয়েক মাস ধরে জোর দিয়ে বলে আসছেন, রুশ ও ইউক্রেনীয়দের মধ্যে সংঘাত একটি শান্তিচুক্তির মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
ইলন মাস্কের মতে, এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়ানোর একমাত্র উপায়, যাতে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না। তিনি বিশ্বাস করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এমনই একজন কট্টরপন্থি, যিনি পরাজয় মেনে নেবেন না। এসব বিশ্বাসের ভিত্তিতে তিনি মস্কোকে গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দেওয়াসহ সংকট সমাধানের জন্য চাপ দেওয়ার পক্ষে। শান্তির জন্য ইলনের এই আহ্বান প্রতিবারই ইউক্রেন ও তার মিত্রদের দ্বারা উপেক্ষিত বা সমালোচিত হয়েছে।
পশ্চিমারা এই যুদ্ধকে গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্রের মধ্যকার লড়াই হিসেবে তুলে ধরছে এবং বিশ্বাস করে, এ যুদ্ধের অবসান ঘটানো রাশিয়ার ওপর নির্ভর করে; যাতে এরই মধ্যে হাজারো মানুষ নিহত ও লাখো নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কেউ জানে না এই যুদ্ধ কবে, কীভাবে শেষ হবে।
আর এ অবস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা বড় অংশে দায়ী বলে বিবেচনা করছেন ইলন ও তার সহযোগীরা। তাদের মতে, মার্কিন কূটনীতিকরা ভালো কাজ করেননি, বরং এক্ষেত্রে তারা ব্যর্থও হয়েছেন; যা যুক্তরাষ্ট্রকে এই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় পরাজয়বরণকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইলন ও তার সহযোগীদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা যুদ্ধবাজে পরিণত হয়েছেন। তারা ভুলে গেছেন, তাদের ভূমিকা হওয়া উচিত সবচেয়ে খারাপটা এড়াতে আলোচনা করা। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে এবং এটি আরও বাড়তে পারে; তাই এটি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির ব্যর্থতা। রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে একটি অপ্রত্যাশিত জোটের উত্থানের ফলে এ ব্যর্থতা আরও বড় হয়েছে।
গত সপ্তাহে টিভিতে সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন ইলনের বন্ধু প্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগকারী ডেভিড স্যাকস। এরই সূত্র ধরে গত রবিবার টুইটারে এমন মন্তব্য করেন ইলন।
ওই মন্তব্যে স্যাকস বলেছিলেন, ‘আমাদের স্টেট ডিপার্টমেন্টে ক্রুসেডাররা আছেন, যারা শুধু ন্যাটোর সম্প্রসারণ চালিয়ে যেতে চান এবং আমি জানি না কেন তারা দেখতে পাচ্ছেন না, এটি রুশদের কাছে অগ্রহণযোগ্য, যেভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৬২ সালে কিউবায় পরমাণু অস্ত্র স্থাপনের চেষ্টা করেছিল, যেটা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল।’ ইলন এই মন্তব্য সমর্থন করে ওই মন্তব্য যুক্ত করে টুইট করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ওই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইলন এবারই প্রথম বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করছেন, বিষয়টি তা নয়। তিনি এর আগেও একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টরিয়া নুল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ইলন বলেছিলেন, নুল্যান্ড শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ওকালতি করছেন না।
সূত্র : দ্য স্ট্রিট