প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৩ ২২:২৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বড়জোর আর এক বছর। এর মধ্যেই ভয়াবহ আর্থিক সংকট নেমে আসবে রাশিয়ায়। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সাইবেরিয়ায় অর্থনীতিসংক্রান্ত এক বৈঠকে এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন রাশিয়ার শিল্পপতি ওলেগ ডেরিপাস্কা। ওলেগের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে রাশিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম তাস জানিয়েছে, ‘আগামী বছরের মধ্যেই রাশিয়ার অর্থভাণ্ডার শূন্য হয়ে যাবে। আমাদের দেশের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।’
ওলেগ এমন সময় এই দাবি করলেন, যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জোর গলায় দাবি করছেন যে, পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অর্থনীতি এখনও চাঙ্গা। রুশ শিল্পপতি ওলেগের এই দাবির পর গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তাহলে কি পুতিনের দাবি মিথ্যা?
সম্ভাব্য আর্থিক সংকট থেকে বাঁচতে বন্ধুদেশগুলোর বড় ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ওলেগ। রাশিয়ার এই পরিস্থিতির জন্য ইউক্রেন যুদ্ধ দায়ী বলেও দাবি করছেন তিনি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকেই রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর একাধিক নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে এসেছে। সাড়ে ১১ হাজার নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে রাশিয়ার ওপর। শুধু তা-ই নয়, বিদেশি অর্থভাণ্ডারে থাকা রাশিয়ার প্রায় ৩০ হাজার কোটি ডলার আটকে দেওয়া হয়েছে।
এসব করা হয়েছে যাতে আর্থিক চাপে পড়ে যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে আসেন পুতিন। কিন্তু তার পরও ইউক্রেনে হামলা জারি রেখেছেন তিনি।
রাশিয়ার সরকারি তথ্য বলছে, গত বছরে মোট আয় ২.১ শতাংশ কমেছে। সেখানে এ বছরের জানুয়ারিতে গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় আয় কমেছে ৩৫ শতাংশ। আর খরচ একলাফে বেড়েছে ৫৯ শতাংশ। ফলে বাজেটে ঘাটতি হয়েছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।
যুদ্ধ না থামালে পশ্চিমা দুনিয়ার আরও নিষেধাজ্ঞা চাপতে পারে বলে মনে করছেন ওলেগ। আর সেটা আঁচ করতে পেরেই তেল উৎপাদনে কাটছাঁট করতে শুরু করে দিয়েছে পুতিন প্রশাসন। ওলেগের মতে, রাশিয়ার অর্থনীতির ভবিষ্যৎ এখন বেশির ভাগটাই ঝুলে রয়েছে ইউক্রেন নিয়ে পুতিন কী অবস্থান নেন, তার ওপর।
এদিকে, রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ।
অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়াকে অস্ত্র সহায়তা দিলে চীনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
বাইডেন এবং শোলজ গত শুক্রবার (৩ মার্চ) ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউক্রেনের জন্য ৪শ মিলিয়ন ডলারের একটি নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। নতুন এই সামরিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় রয়েছে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যান, গোলাবারুদ এবং কৌশলগত সেতু।
ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির নেতার মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি এবং রাশিয়াকে চীনের সম্ভাব্য অস্ত্র সহায়তা। গত শুক্রবার ওভাল অফিসে শোলজের পাশে বসে বাইডেন সামরিক ব্যয়কে ব্যাপকভাবে বাড়ানোর জন্য জার্মান নেতার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
বাইডেন বলেন, ‘ন্যাটো মিত্র হিসেবে আমরা জোটকে আরও শক্তিশালী করছি।’ শোলজ বলেন, এটি প্রমাণ করা গুরুত্বপূর্ণ যে মিত্ররা কিয়েভের পেছনে যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ আছে।
সূত্র : গার্ডিয়ান