ভূমিকম্প-পরবর্তী সংকট
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৩ ১৭:০১ পিএম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৩ ১৭:১১ পিএম
দুই বছর বয়সি ক্রাশ সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নূর আব্দেল কাদেরের একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আরেকটি পা রক্ষা করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছবি : সংগৃহীত
নূর আব্দেল কাদেরের বয়স দুই বছরের মতো। ভূমিকম্পে মাতা-পিতা সবাইকে হারিয়েছে এ শিশু। নিজেও ফিরে এসেছে মৃত্যুর মুখ থেকে। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে ইতোমধ্যে হারিয়েছে ডান পা। বাম পা রক্ষা করা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। এ অবস্থায় নূরকে নানান ধরনের শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
ভারী কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে কোনো ব্যক্তির হাত বা পায়ের মতো কোনো অঙ্গ যদি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা আগের অবস্থায় ফেরা প্রায় অসম্ভব, ডাক্তারি পরিভাষায় তাকে ক্রাশ সিন্ড্রোম বলে। এ ধরনের রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসার পাশাপাশি কাউন্সিলিং দরকার হয়।
নূর বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার আফ্রিন শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের ডাক্তার আব্দেল সালাম আল-নাসান আল জাজিরারকে বলেন, নূরের দুই পা গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তার একটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হয়েছি। তা না কাটা হলে তার আরও ক্ষতি হতো। এখন তার আরেকটি পা বাঁচানোর চেষ্টা করছি।
কিন্তু অবশিষ্ট বাম পা রক্ষা করতে হলে নূরকে দীর্ঘ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এজন্য তার জটিল সার্জারি দরকার। আরেকটিতে তার কৃত্রিম পা দরকার।
কিন্তু সিরিয়ার বর্তমান যা অবস্থা, তাতে নূরের অবশিষ্ট পাটি সুস্থ করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত ডাক্তার আব্দেল সালাম আল-নাসান।
৬ ফেব্রুয়ারির ৭ দশমিক ৮ ও ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এরমধ্যে সিরিয়ায় নিহত হয়েছে ৬ হাজারের বেশি।
ভূমিকম্পে সিরিয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিব ও আলেপ্পো। এরমধ্যে ইদলিব বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত। প্রায় এক যুগের গৃহযুদ্ধে সেখানকার মানবিক অবস্থা আগে থেকে সংকটাপন্ন। ভূমিকম্পে তা আরও গভীর হয়েছে।
ভূমিকম্পে সিরিয়ায় ১২ হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয়েছে। এরমধ্যে ৬ মার্চ পর্যন্ত এক মাসের মাথায় অন্তত ১০০ ব্যক্তি ক্রাশ সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এসব রোগীর যথাযথ চিকিৎসার পর্যাপ্ত সামগ্রী ইদলিব বা আলেপ্পোয় নেই।
ক্রাশ সিন্ড্রোমের কারণে ভুক্তভোগীর শরীরের ওপর দিয়ে বিপুল ধকল যায়। তাই যথাযথ চিকিৎসা করা না গেলে রোগীর কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, অন্য অঙ্গেও ভয়ানক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সূত্র : আল জাজিরা