প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১২:০৬ পিএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩২ পিএম
কম্বোডিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা কেম সোখা। ছবি : সংগৃহীত
কম্বোডিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা কেম সোখাকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কম্বোডিয়ান ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করতেই তাদের নেতাকে মিথ্যে মামলায় ওই সাজা দেওয়া হয়েছে।
কেম সোখাকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
কেম সোখার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিদেশি শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে। হুন সেন হলেন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসকদের একজন, যিনি ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন।
আগামী জুলাইয়ে কম্বোডিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির বেশির ভাগ মানুষই আশা করেন যে, কেম সোখা আবার নির্বাচন করবেন। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে ওই সাজা দেওয়া হলো।
৬৯ বছর বয়সি কেম সোখাকে ২০১৩ সালের একটি ভিডিওর ভিত্তিতে ২০১৭ সালে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছেন। কেম সোখা এবং তার আইনজীবীরা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে করা মামলা ভিত্তিহীন।
কম্বোডিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডব্লিউ প্যাট্রিক মারফি শুক্রবার (৩ মার্চ) বলেছেন, ‘মামলাটির রায় ন্যায়বিচারের মৃত্যুর শামিল।’ কেম সোখার আইনজীবী আং উদোম বলেছেন, তার আইনি প্যানেল ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে।
এদিকে, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং পশ্চিমা সরকারগুলো কেম সোখার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেছেন, ‘শুরু থেকেই এটা স্পষ্ট ছিল যে, কেম সোখার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো কম্বোডিয়ার প্রধান বিরোধী নেতাকে পাশ কাটিয়ে দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। কেম সোখাকে কারাগারে পাঠানোর অর্থ কেবল তার রাজনৈতিক দলকে ধ্বংস করা নয়, বরং জুলাই মাসে একটি সত্যিকারের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আশাকে ধ্বংস করা।’
কেম সোখা একজন সাবেক মানবাধিকার আইনজীবী, যিনি কম্বোডিয়ান ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টির নেতৃত্ব দেন। অতীতের নির্বাচনে দলটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তার দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। দলটির বেশিরভাগ নেতাদের হয় মিথ্যে মামলার বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে কিংবা নির্বাসনে বাধ্য করা হয়েছে।
হুন সেন গত মাসে দেশটির সর্বশেষ স্বাধীন মিডিয়া আউটলেটগুলোর মধ্যে একটি ‘ভয়েস অব ডেমোক্রেসি’ বন্ধ করে দেন।
সূত্র : বিবিসি