× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

যুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে পুতিনের ভাগ্য

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৫৮ এএম

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

তিন বছর আগে রাশিয়ার রাষ্ট্রপরিচালিত এক গণমাধ্যম রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হয়ে প্রচারণায় নেমেছিল। তিনি যেন আরও ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারেন, সে লক্ষ্যে সংবিধানে আনা নতুন এক পরিবর্তনকে সমর্থন করার আহ্বান জানানো হচ্ছিল তাদের টিভি চ্যানেলে।

সংবাদ পাঠিকা পুতিনকে সে সময় তুলনা করেছিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন হিসেবে। তিনি বলেছিলেন, বিশ্বে দেখা দেওয়া অসন্তোষের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে রাশিয়াকে স্থিতিশীল জাহাজের মতো করে পরিচালনা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। 

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি এসে চিত্র গেছে পাল্টে। ক্রেমলিনের সেই ক্যাপ্টেন এবার নিজেই সমুদ্রকে উত্তাল করে তুলেছেন। তারপর সে উত্তাল সাগরে নেমেছেন জাহাজ নিয়ে। সে জাহাজকে তিনি সরাসরি নিয়ে যাচ্ছেন হিমবাহের দিকে। যেখানে সেটি চুরমার হয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কাও রয়েছে।

ইউক্রেনে পুতিনের চালানো হামলায় ব্যাপক মৃত্যু ও ধ্বংসলীলা দেখা গেছে। ক্ষয়ক্ষতি রাশিয়ারও কম হয়নি। অনেকের অনুমান, হাজারো রুশ সেনা এই এক বছরের যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে।

শুধু তা-ই নয়, জানা গেছে, লাখো রুশ নাগরিককে জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ানো হচ্ছে। রুশ বন্দিসহ দোষী সাব্যস্ত দণ্ডপ্রাপ্তদেরও পাঠানো হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে। 

যুদ্ধে শুধু ইউক্রেন-রাশিয়ার নয়, গোটা বিশ্বের ক্ষতি হয়েছে। বেড়ে গেছে জ্বালানির দাম, খাদ্যদ্রব্যের দাম। হুমকির সম্মুখীন হয়েছে ইউরোপ এবং বিশ্ব। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কেন যুদ্ধে জড়ালেন?

ঘটনাটি বুঝতে হলে কিছুটা পেছনে ফিরতে হবে। ক্রেমলিন মনে করেছিল, বিদ্যুদ্বেগে এগোবে তাদের বিশেষ সামরিক অভিযান। ইউক্রেন যে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে, সেটাই আমলে নেননি পুতিন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী একাতেরিনা শুলমানের মতে, ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজয়ের একটি ঘটনা দরকার ছিল পুতিনের, যা রাশিয়ার মানুষদেরকে পুতিনের সক্ষমতা সম্পর্কে আশ্বস্ত করবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। 

তাহলে এখন কোনদিকে মোড় নিচ্ছে সব? কী-ই বা হতে পারে সামনে? পুতিন সেসব ব্যাপারে কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন জাতির উদ্দেশে দেওয়া এবারের বার্ষিক ভাষণে। সেটির বেশিরভাগ জুড়েই ছিল পশ্চিমের প্রতি বিষোদগার। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের দায় চাপিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের ওপর। রাশিয়া এক্ষেত্রে নির্দোষ বলেও উল্লেখ করেছেন।

তবে তাই বলে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেননি পুতিন। উল্টো নিউ স্টার্ট নামের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে সরে আসার কথা বলেছেন। চুক্তিটি পারমাণবিক অস্ত্র প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে হয়েছিল। এখনও যার মেয়াদ শেষ হয়নি। ফলে সংঘাত আরও তীব্রতার পর্যায়ে চলে যাওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। 

পুতিন এখন নিজেকে তুলে ধরছেন অবরুদ্ধ এক দুর্গের নেতা হিসেবে, যেখানে তিনিই শেষ ভরসা। নিজ ভাষণে তিনি যেভাবে পিটার দ্য গ্রেট বা ক্যাথরিন দ্য গ্রেট-এর মতো সাম্রাজ্যবাদী রুশ শাসকদের কথা উল্লেখ করছেন, তাতে যে-কারও মনে হতেই পারে যে রুশ সাম্রাজ্যকে কোনো না কোনোভাবে আবার প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব এখন পুতিনের কাঁধেই।

তবে এ যুদ্ধের ফেরে বড় একটি মূল্য দিতে হয়েছে তাকে। নিজ দেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার যে ছবিটি পুতিন তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন, তা ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে। হতাহতের সংখ্যা, যুদ্ধে সেনা মোতায়েন এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে সেই জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েক লাখ রুশ নাগরিক দেশত্যাগ করেছেন। যাদের বেশিরভাগ তরুণ, কর্মদক্ষ এবং শিক্ষিত। এদের হারানোর ফলে রুশ অর্থনীতি আরও ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

পুতিনকে সামরিকভাবে প্রতিহত করা ছাড়া অন্য কোনোভাবে থামানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন তার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আন্দ্রেই ইলারিওনফ। পাশাপাশি এটিও বলেছেন, ‘যে-কারও সঙ্গে আলোচনায় বসা সম্ভব। পুতিনের সঙ্গে অতীতে আলোচনায় বসার ঐতিহাসিক রেকর্ডও রয়েছে। তার সঙ্গে নানা চুক্তিও হয়েছে।’ গোটা বিষয়টি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, এখন সেটিই দেখার বিষয়।

বহু শতাব্দী ধরে রাশিয়া টিকে আছে। আগামীতেও থাকবে। কিন্তু পুতিন টিকবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ তার ভাগ্য জড়িয়ে গেছে ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ অধ্যায়ের সঙ্গে। 

সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা