প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৫৩ পিএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:১৬ পিএম
গুয়ানতানামো বে কারাগারের একটি গার্ড টাওয়ার। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের দুই সহোদর যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত কারাগার গুয়ানতানামো বে থেকে ২১ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন। ৫৫ বছর বয়সি আবদুল ও ৫৩ বছর বয়সি মুহাম্মদ রাব্বানিকে ২০০২ সালে করাচি থেকে আটক করে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর আল-কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মুক্ত আবদুল ও মুহাম্মদ রাব্বানি শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছেছেন। পরে তাদের করাচিতে পরিবারের কাছে পাঠানোর কথা রয়েছে।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য মুস্তাক আহমেদ খান শুক্রবার এক টুইটে লেখেন, ’এই দুই ভাইকে বিনাদোষে গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২১ বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তাদের কোনো বিচার হয়নি, আদালতে তোলা হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও প্রমাণিত হয়নি। যাই হোক, তাদের মুক্তিকে আমরা স্বাগত জানাই। তাদের মুক্তির জন্য কাজ করায় পাকিস্তানের সিনেটকে ধন্যবাদ জানাই।’ মুস্তাক আহমেদ খান পাকিস্তানের সিনেটে মানবাধিকার কমিটির চেয়ারম্যান।’
এই দুই ভাইয়ের মুক্তির কয়েক মাস আগে ৭৫ বছর বয়সি সাইফুল্লাহ পরচা নামে আরেক পাকিস্তানিকেও গুয়ানতানামো বে থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আবদুল ও মুহাম্মদ রাব্বানিকে ২০০২ সালে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করে। আল-কায়দার সদস্যদের বাড়িভাড়া পেতে ও ছোট-খাটো অন্য সহযোগিতা করার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গুয়ানতানামো বে-তে পাঠানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা (সিআইএ) কর্মকর্তারা তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করে। কিন্তু তেমন কোনো তথ্য তারা পায়নি।
জেরাকালে সিআইএ তাদের শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া গুয়ানতানামো বে কারাগারেও তারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
দুই ভাই বর্তমানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। ছোট ভাই রাব্বানি কারাগারে অবস্থানকালে পেন্টিংস শেখেন। আসার সময় নিজের সঙ্গে তিনি কিছু পেন্টিংস নিয়ে এসেছেন বলে জানা গেছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার ও সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগনে বিমান হামলার পরের মাসে আফগানিস্তানে হামলা চালানো হয়। আল-কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সারা বিশ্বে তথাকথিত ‘সন্ত্রাসীদের’ প্রেপ্তার অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
ওইসব সন্ত্রাসী রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে কিউবা দ্বীপে স্থাপন করা হয় উচ্চ-নিরাপত্তার কারাগার গুয়ানতানামো বে। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের তুমুল পর্যায় ২০০৩ সালে এই ভয়ংকর কারাগারে প্রায় ৬০০ ব্যক্তিকে রাখা হয়। সেখানে যাদের রাখা হতো তাদের ভয়াবহ সব নির্যাতন করা হতো। গ্রেপ্তারদের অধিকাংশই পরের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। বর্তমানে কারাগারটিতে ৩২ ব্যক্তি আটক রয়েছেন।
সূত্র : আল জাজিরা