× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

উত্তর আফগানিস্তানে মেগা প্রকল্প

বাড়াতে পারে আঞ্চলিক উত্তেজনা

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:০২ এএম

আফগানিস্তানের শুষ্ক উত্তরাঞ্চলে নির্মাণাধীন একটি নতুন খাল খননে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শ্রমিকরা একসঙ্গে কাজ করছেন।

আফগানিস্তানের শুষ্ক উত্তরাঞ্চলে নির্মাণাধীন একটি নতুন খাল খননে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শ্রমিকরা একসঙ্গে কাজ করছেন।

তালেবান কর্মকর্তারা আফগানিস্তানের শুষ্ক উত্তরাঞ্চলে নির্মাণাধীন একটি নতুন খালের কথা ফলাও করে বলা শুরু করেছে। সম্প্রতি ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শ্রমিকরা একসঙ্গে খাল খননের কাজ করছেন।

তালেবান সরকার বলছে, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার লোক এই প্রকল্পে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। এর নাম কোশ টেপা খাল। একবার কাজ শেষ হলে আমু দরিয়া নদীর পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হবে। এতে করে বিস্তীর্ণ এলাকা সেচের আওতায় আসবে। ওই নদীটি একসময় অক্সাস নামে পরিচিত ছিল। নদীটি আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তান হয়ে উজবেকিস্তানে প্রবাহিত হয়েছে। এই আমু দরিয়া মধ্য এশিয়ার দীর্ঘতম নদীর একটি। তালেবানরা আশা করছে, এই প্রকল্পটি ৫ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর মরুভূমিকে কৃষিজমিতে পরিণত করবে। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পানি নিয়ে উজবেকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের বিরোধ তৈরি হতে পারে। 

চার কোটি জনসংখ্যার দারিদ্র্য ও দুর্দশাগ্রস্ত দেশ আফগানিস্তানে এই খালটি তালেবানদের শাসন করার ক্ষমতার একটি বিশিষ্ট পরীক্ষা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দেশটির জাতীয় উন্নয়ন করপোরেশনের প্রধান আবদুল রহমান আত্তাশ ঘোষণা করে বলেছেন, ‘আমাদের যে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে, সে বিষয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে। তবে আমরা প্রমাণ করব যে, আফগানিস্তান তার অর্থনীতিকে দাঁড় করাতে পারে এবং নিজস্বভাবে জাতীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে।’

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকে এ পর্যন্ত তেমন কিছু করতে পারেনি। ওই বছর দেশটির অর্থনীতির ২০ শতাংশের বেশি সংকুচিত হয় বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি তীব্র খরা ও একটি অস্বাভাবিক শীত দেশটির অর্ধেক মানুষকে তীব্র ক্ষুধার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বিশেষ করে আধা-শুষ্ক মধ্য এশিয়ায় পানিপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ করে তুলেছে। সেচ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইরানের সীমান্তের কাছে একটি বাঁধ নির্মাণ শেষ করতে পারায় ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। 

একইভাবে তালেবান সরকার কোশ টেপা খালকে স্বায়ত্তশাসন, স্বাধীনতা এবং শক্তির প্রতীক হিসেবে দেখছে। প্রকল্পটি নতুন নয়। উত্তর আফগানিস্তানে একটি খালের পরিকল্পনা কয়েক দশক ধরে আলোচনা করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সাবেক সরকারের অধীনে। তা সত্ত্বেও তালেবান এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অগ্রগতি দেখিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান প্ল্যানেট ল্যাবস, পিবিসির সরবরাহ করা কৃত্রিম উপগ্রহের চিত্রে দেখা গেছে, গত ১০ মাসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি খাল খনন করা হয়েছে।

তবে দ্রুত কাজ করা মানেই সেটি ভালো কাজ তা নয়। জার্মানিতে থাকা একজন আফগান প্রকৌশলী নাজিবুল্লাহ সাদিদ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, খালটি ঠিকভাবে খনন করা না হলে পানি সেখানকার শুষ্ক বালুকাময় মাটি শুষে নেবে। তারা তাড়াহুড়ো করছে। 

তা ছাড়া এই খালের অর্থায়নও সহজ হবে না। আফগানিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, খালটি তারা নিজস্ব অর্থায়নে করবে। বিদেশি দাতারা তালেবানদের কাছে বিশাল প্রকল্পের জন্য অর্থ দেওয়ার জন্য আগ্রহী নয়। কারণ সরকার স্বাভাবিক জীবন থেকে মেয়েদের নিষিদ্ধ করছে। ২৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটির জন্য ৯১০ কোটি ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা ২০২২ সালের প্রথম আট মাসে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজস্বের প্রায় আট শতাংশের সমতুল্য।

আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো, খালটির নির্মাণ শেষ হলে আঞ্চলিক সংঘর্ষ বাড়তে পারে। খালটি উজবেকিস্তানের সীমান্তের কাছাকাছি এলাকা থেকে আমু দরিয়ার পানি সরিয়ে দেবে। তুলার ক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য এই নদীর ওপর নির্ভর করে উজবেকিস্তান। আবার উজবেকিস্তান থেকে বেশিরভাগ বিদ্যুৎ আমদানি করে থাকে আফগানিস্তান। তাই উজবেকিস্তান কখনও বেকে বসলে তা সামাল দেওয়ার সক্ষমতা আফগানিস্তানের নেই। 

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কাবুলের বাসিন্দারা দিনে মাত্র দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেয়েছিল, কারণ তাসখন্দ সরকার আফগানিস্তানে রপ্তানি কমিয়ে নিজেদের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করেছিল। ভবিষ্যতে পানি সম্পর্ককে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। 

সূত্র : ইকোনমিস্ট

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা