× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘নিঃসঙ্গ’ সিরিয়ায় ত্রাণ ও চিকিৎসা-সংকট প্রকট

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:০১ পিএম

আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:০৫ পিএম

প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-সামগ্রীর অভাবে আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে সিরিয়ার হাসপাতালগুলো। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবের একটি হাসপাতাল। ছবি : সংগৃহীত।

প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-সামগ্রীর অভাবে আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে সিরিয়ার হাসপাতালগুলো। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবের একটি হাসপাতাল। ছবি : সংগৃহীত।

এক যুগের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্প যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যে দুটি বড় শহর ভূমিকম্পে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার একটি ইদলিব। এটি আবার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত। তাই সেখানে স্বাস্থ্যসেবা, দৈনন্দিন জীবন আগে থেকেই দুরূহ ছিল। 

ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত আলেপ্পো প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তার সার্বিক অবস্থাও আগে থেকে বিপর্যস্ত। ভূমিকম্পের পর শহর দুটির করুণ অবস্থা আগের যেকোনো সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। 

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতের মধ্যে তুরস্কে প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার। আর সিরিয়ায় পাঁচ হাজার ৮০০-এর বেশি। নিহতের সংখ্যা প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে।  

এদিকে ভূমিকম্পের পর সিরিয়ার ইদলিব ও আলেপ্পোতে ব্যাপক পরিসরে কোনো উদ্ধার কাজই হয়নি। বেসামরিক হোয়াইট হেলমেটস ও স্থানীয়রাই যা পারে উদ্ধার কাজ চালিয়েছে। 

প্রয়োজনীয় আধুনিক সামগ্রীর অভাব, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে ইদলিব ও আলেপ্পোয় রীতিমতো ট্র্যাজেডি দেখা দিয়েছে। এই ট্র্যাজেডি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১২ বছরের চেয়েও ভয়াবহ বলে মনে করেন ভুক্তভোগীদের একাংশ। 

হোয়াইট হেলমেটস নামের বেসামরিক উদ্ধারকারী দলের মুখপাত্র ওবাদাহ আলওয়ান ইস্তাম্বুল থেকে বিবিসিকে বলেন, ‘সিরিয়ায় পাঠানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল রয়েছে। কিন্তু উদ্ধারকার্য পরিচালনার জন্য তাদের যে ধরনের আধুনিক সরঞ্জাম দরকার, তা নেই। নেই জ্বালানি ও খাবার। এ অবস্থায় ইদলিবে বলতে গেলে এ পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্ধারকাজ পরিচালনা করাই সম্ভব হয়নি।’

২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উদ্ধারকার্য পরিচালনার জন্য জন্ম হয় বেসামরিক সংগঠন হোয়াইট হেলমেটসের। দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চলে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে তারা ইতোমধ্যে খ্যাতি লাভ করেছে।  

তীব্র খাদ্যসংকট

বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার ইদলিবের জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ জাতিসংঘের ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। তুরস্ক সীমান্ত থেকে মাত্র একটি করিডোর দিয়ে সেখানে জাতিসংঘের ত্রাণ পৌঁছাত। ভূমিকম্পের পর সেই ত্রাণের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেলেও সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হয়নি। উল্টো বিলম্বিত হয়েছে।  

এ অবস্থায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপের পরিচালক করিন ফ্লেশার শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন, ‘ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় খাবারের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। বিদ্রোহী অধিকৃত অঞ্চলটির প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ডব্লিউএফপির ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিবেশী তুরস্ক হয়েই সেখানে ডব্লিউএফপির ত্রাণ প্রবেশ করে। কিন্তু ভূমিকম্পের পর অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফটকটি বন্ধ ছিল।’

এদিকে সিরিয়ায় শ্লথ উদ্ধার তৎপরতা ও বিলম্বিত ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য জাতিসংঘের প্রোটোকলকে দায়ী করেছেন হোয়াইট হেলমেটসের মুখপাত্র ওবাদাহ আলওয়ান।

‘কিছুই করতে পারছি না’

ইদলিবের হেরিম শহরের একটি ফিল্ড হাসপাতালের অ্যানেস্থেটিস্ত আবদেলবাসেত খলিল বার্তা সংস্থা এএফপিকে সোমবার বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এ পর্যন্ত আড়াই হাজারের মতো আহত ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের প্রায় ৪০০ জন মারা গেছেন। আমাদের হাতে প্রয়োজনীয় কোনো চিকিৎসা-সরঞ্জাম নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। এসব থাকলে এসব ব্যক্তির একটা বড় অংশকে বাঁচানো যেত।’ 

তুরস্কের তুলনায় সিরিয়ার উদ্ধারকাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। তাই স্বাভাবিকভাবে সেখানে জীবিত উদ্ধারও কম। তবে সিরিয়ায়ও কিছু ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তার সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। 

নতুন করিডোর

বাশার আল-আসাদ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আসাদ আলেপ্পো ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবে ত্রাণ কার্যক্রম বাড়াতে এবং পুনর্গঠনকাজে এগিয়ে আসতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

ভূমিকম্পে শুধু আলেপ্পোতে ২ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বাশার আল-আসাদের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে। অন্যদিকে ইদলিবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ কার্যক্রম বাড়াতে আরও দুটি নতুন করিডোর খুলতে সম্মত হয়েছে বাশার সরকার।  

৪০ কোটি ডলারের আবেদন

পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় আগে থেকে সহায়তা কার্যক্রম করে আসছিল জাতিসংঘ। ভূমিকম্পের পর দেরিতে হলেও সহায়তা কার্যক্রম বাড়াতে চেষ্টা করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। 

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সংস্থাটির মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস মন্তব্য করেছিলেন, ‘বিশ্ব সিরিয়াকে ভুলে গেছে। এজন্য বিবেকের কাছে আমাদের জবাবদিহিতা করতে হবে।’ 

গুতেরেসের মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করার ইঙ্গিত দেয়। এরপর মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়ার জন্য ৩৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার তহবিল সংগ্রহের ঘোষণা দেন গুতেরেস। জাতিসংঘের সদস্যদের প্রতি এ তহবিলে অর্থ দিতে আহ্বান জানান তিনি। অন্যদিকে তুরস্কের জন্যও একই ধরনের তহবিল সংগ্রহের ঘোষণা দেন জাতিসংঘের মহাসচিব।

সূত্র : এএফপি, আল জাজিরা, বিবিসি।



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা