প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩২ পিএম
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩৩ পিএম
হিজাব ছাড়া দাবা খেলছেন সারা খাদেম।
ইরানের শীর্ষ দাবাড়ু ২৫ বছর বয়সি সারা খাদেম ইরানের প্রতিবাদ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে হিজাব ছাড়াই খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার হিজাব ছাড়া দাবা খেলার ছবি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
তখনই সারা ভেবেছিলেন যে, এর পরিনতি খারাপ হবে। তিনি তখনই ধারণা করেছিলেন যে, ইরানে তিনি আর ফিরতে পারবেন না। তেহরানে তার গ্রেপ্তারের কাগজপত্র অপেক্ষা করছে। তাই তিনি এখন তার স্বামী এবং এক বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ স্পেনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।
তিনি এবং তার পরিবার বিবিসিকে তার সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ না করতে বলেছেন। তাদের উদ্বেগ হলো, তারা ইরান থেকে হাজার হাজার মাইল দূরেও থাকলেও তারা আক্রান্ত হতে পারেন।
ইরানের নারীদের জনসমক্ষে মাথার হিজাব পরতে হয়, এমনকি বিদেশে থাকলেও। কিন্তু, সেপ্টেম্বরে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর পরে, দেশটির অভ্যন্তরে বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী নারীদের সমর্থনে অনেকেই এগিয়ে আসছেন।
সারা খাদেম জানান, তিনি গত বছরের ডিসেম্বরে কাজাখস্তানে হিজাব ছাড়াই টুর্নামেন্টে খেলার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, প্রতিযোগীরা শুধুমাত্র ক্যামেরার সামনে হিজাব পরতেন। তাই এটিকে তিনি ভণ্ডামি মনে করেন। তিনি বলেন, ইরানের নারীরা রাস্তায় ত্যাগ স্বীকার করছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিল। তিনি হিজাব বাতিল করে তাদের চেয়ে অনেক কমই করতে পেরেছিলেন।
তিনি কি নিজেকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই। আমি অন্য উপায়ে আমার প্রভাব ব্যবহার করেছি।’
সারা খাদেম প্রায় আট বছর বয়স থেকেই প্রতিযোগিতামূলকভাবে দাবা খেলছেন। সারা খাদেম সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, তিনি জাতীয় দল ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন।
ওই প্রতিবাদের কারণে তার জীবন একেবারেই বদলে গেছে, তার কি কোনো অনুশোচনা নেই? এই প্রশ্নে তিনি বিনা দ্বিধায় বলেন, ‘না। এটা সত্যি যে আমি আমার পরিবারকে মিস করি। কিন্তু আমি বলব না যে, সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত। আমি এখনও ইরানের প্রতিনিধিত্ব করি এবং আমি ইরানী। ইরানের মানুষ এখনও আমাকে ইরানী হিসাবেই দেখে।’
তিনি বলেন, ‘আমি একজন অধিকারকর্মী নই এবং এত ঝুঁকিপূর্ণ লোকদের জন্য আমার কাছে কোনো বার্তা নেই। যারা রাস্তায় প্রতিবাদ করছেন তারা আমাকে এবং আরও অনেকের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক।’
তার স্বামী আরদেশির আহমাদি পেশায় একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং ইন্টারনেট শো’র উপস্থাপক। তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের ভুল দিকে থাকার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও পেয়েছেন। একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের কারণে তাকে মারধর করা হয় এবং তিন মাসের জন্য কারারুদ্ধ করা হয়।
গ্লোডেন ভিসার নিয়মে তিনি স্পেনে থাকতে পেরেছেন। কেউ অর্ধ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের সম্পত্তি কিনলে তাকে স্পেনে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়।
সূত্র : বিবিসি