× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এক ট্রান্সজেন্ডারের মা হওয়ার গল্প

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৯ পিএম

আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:২২ পিএম

এই দম্পতির শিশু কবে ভূমিষ্ঠ হবে তা নিরাপত্তার খাতিরে প্রকাশ করা হয়নি। তবে শিগগিরই সুসংবাদ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

এই দম্পতির শিশু কবে ভূমিষ্ঠ হবে তা নিরাপত্তার খাতিরে প্রকাশ করা হয়নি। তবে শিগগিরই সুসংবাদ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

ট্রান্সজেন্ডার কোনো ব্যক্তি গর্ভবতী হবেন, মা হবেন— এটা গ্রহণ করার মতো পরিপক্বতা এখনও ভারতীয় সমাজের হয় নাই। কিন্তু এমনটি শুরু হয়েছে। ভারতের ট্রান্সজেন্ডার এক দম্পতির গর্ভাবস্থার  ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

ইনস্টাগ্রামে গত সপ্তাহে ভাইরাল হওয়া ওই আলোচিত দম্পতির একজনের নাম জিয়া পাভেল, অপর জনের নাম জাহাদ। ২১ বছর বয়সি জিয়া নারী হয়ে জন্মে ছিলেন। আর জাহাদ জন্মে ছিলেন পুরুষ হয়ে। তারা উভয়ে এখন বিপরীত সামাজিক পরিচয় নিয়ে ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরেলায় সংসার করছেন। 

পাভেল বিবিসিকে বলেন, আমার মা হওয়ার খুব শখ ছিল। কিন্তু জন্মগতভাবে আমি পুরুষ। তাই এটা সম্ভব নয়। তাই আমার সঙ্গী জাহাদ সেই শখ পূরণ করছেন। তিনি এখন গর্ভবতী। 

ইনস্টাগ্রামে জাহাদের গর্ভাবস্থার কিছু ছবি প্রকাশ হওয়ার পর অভিনন্দনে ভাসছেন এই ট্রান্সজেন্ডার দম্পতি। ট্রান্সজেন্ডার অভিনেত্রী এস নেঘা পাভেলের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, ‘ট্রান্সদেরও পরিবার থাকতে পারে। এটা তাদের অধিকার। 

গর্ভাবস্থার ছবি ইনস্টাগ্রামে প্রকাশের পর অভিনন্দনে ভাসছে পাভেল ও জাহাদ দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত 

গর্ভধারণের পরিকল্পনা

ট্রান্সজেন্ডার দম্পতি হিসেবে পাভেল ও জাহাদ নিয়মিত হরমোন থেরাপি নিতেন। কিন্তু দেড় বছর আগে তারা বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। নিজেদের ডাক্তারদের বিষয়টি জানান। ডাক্তারের পরামর্শে তারা হরমোন থেরাপি নেওয়া বন্ধ করেন। তবে বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তারা আবার থেরাপি নেওয়া শুরু করবেন বলে জানান পাভেল। 

এই দম্পতি হরমোন থেরাপি নিলেও জাহাদের ডিম্বাশয় ও জরায়ু এখনও পর্যন্ত সরানো হয়নি। তাই গর্ভধারণে তার কোনো সমস্যা হয়নি। এই দম্পতির শিশু কবে ভূমিষ্ঠ হবে তা নিরাপত্তার খাতিরে প্রকাশ করা হয়নি। তবে শিগগিরই সুসংবাদ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর জাহাদ ফের হরমোন থেরাপি নিলে তার সমস্যা হবে বলে জানিয়েছেন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাক্তার মহেশ ডিএম। 

পরিবারের অনুভূতি

পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলেও পাভেল ও জাহাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। জাহাদের গর্ভবতী হওয়ায় বেশ খুশি তার পরিবার। জাহাদের পরিবারে নানান ভাবে এই দম্পতিকে সহায়তা করতে শুরু করেছে। 

জাহাদের মা-ই গর্ভধারণের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার না করতে তাদের প্রাথমিকভাবে নিষেধ করেন। পরবর্তিতে সে মত তিনি প্রত্যাহার করে নেন। এরপরই গত সপ্তাহে তারা নিজেদের গর্ভাবস্থার কিছু ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন।

এদিকে পাভেলের পরিবার এখন তার জন্মপরিচয় রূপান্তরের বিষয়টি মেনে নেয়নি। 

পাভেল ও জাহাদের পরিচয়

তিন বছর আগে পাভেল ও জাহাদের মধ্যে পরিচয় হয়। তারা উভয়ে পরিবার থেকে বিতাড়িত। 

নিজ সম্পর্কে পাভেল বলেন, ‘একটি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। আমি নাচ শিখতে চাইতাম। কিন্তু ভারতীয় ক্ল্যাসিক নাচ শেখাটা আমার পারিবার কখনও মেনে নেয়নি। তারা আমার চুল ছেঁটে দিত।’ 

‘এ অবস্থায় একটা পর্যায়ে আমি পরিবার থেকে বেরিয়ে আসি। নাচ শিখি। এখন আমি নিজেই কোঝিকোড় জেলায় নাচ শিখাই।’

অন্যদিকে পেশায় হিসাবরক্ষক জাহাদের জন্ম এক খ্রিস্টান পরিবারে। কেরেলার তিরুবনন্তপুরম শহরের একটি জেলে পরিবারেই তার বেড়ে ওঠা। জাহাদের পরিবারও তার আচরণ মেনে নিতে পারছিল না। তাই তিনিও পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যান। বর্তমানে তিনি একটি সুপারমার্কেটে কাজ করেন।  

পাভেল পেশায় নৃত্যশিক্ষক। আর জাহাদ একটি সুপারমার্কেটের হিসাবরক্ষক। ছবি: সংগৃহীত 

ভারতে ট্রান্সদের অবস্থা

সরকারি তথ্যমতে, ভারতের প্রায় ২০ লাখ ট্রান্সজেন্ডার মানুষ রয়েছে। কিন্তু নানান এনজিও দেশটিতে ট্রান্সদের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করে । 

২০১৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রুলে ট্রান্সদের সমঅধিকার স্বীকার করে নেয়। কিন্তু তারপরও ভারতীয় সমাজে ট্রান্সদের সহজভাবে নেওয়া হয় না। তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে মোটাদাগে তারা বঞ্চিত থাকেন। তাছাড়া ট্রান্সদের বিরুদ্ধে নানান ধরনের নিপীড়ন একটি সাধারণ ঘটনা, যার অধিকাংশ খবর মূল ধারার গণমাধ্যমে আসে না।

সূত্র : বিবিসি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা