প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:২৯ পিএম
জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমার জান্তা সরকার বুধবার দেশটির জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে। ফলে চলতি বছরের আগস্টে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচণ আয়োজনের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তা আরও পিছিয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি জান্তাবিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ব বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জান্তা নিয়ন্ত্রিত সম্প্রচার মাধ্যম এমআরটিভির বরাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা বাড়ানোর জন্য জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কাউন্সিলকে অনুরোধ করেন (জান্তা প্রধান) মিন অং হ্লাইং। তার অনুরোধ গ্রহণ করে তা আরও ছয় মাস জারি রাখার সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি মিন্ট ওই।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ শীর্ষ রাজনীতিবিদদের আটক করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এরপর ছয় দফায় তা দুই বছর বাড়ানো হয়। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) তা শেষ।
অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয় মিয়ানমারে। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় ঐক্য সরকার (নাগ) গঠন করে। তৈরি করা হয় গণপ্রতিরক্ষা বাহিনী (পিডিএফ)। পিডিএফের সঙ্গে দেশটি অনেকগুলো পুরোনো সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত হয়েছে। তারা প্রায় প্রতিদিনই জান্তার বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। এতে জান্তার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে।
তবে জান্তার নিপীড়নের মাত্রাও অত্যন্ত ভয়াবহ। জান্তার হাতে দুবছরে দুই হাজার ৯০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামের একটি বেসরকারি সংস্থার দৈনিক হালনাগাতে। একই সময়ে ১৮ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নীরব ধর্মঘট
সামরিক অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধীদের ডাকা ‘নীরব ধর্মঘট’ মৌনতার মুখরতা তৈরি করেছে মিয়ানমারে। বুধবার দেশটির প্রধান কিছু শহরে জান্তাবিরোধী নীরব ধর্মঘট পালিত হয়েছে।
সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত প্রায় জনশূন্য ছিল ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়, নাইপিতাও, মনিওয়ার মতো প্রধান শহরগুলো। দোকান-পাট ছিল বন্ধ। রাস্তায় ছিল না কোনো গাড়ি। হালকা কুয়াশায় শহরগুলো দিন-দুপুরে ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইয়াঙ্গুনের এক বাসিন্দা দেশটির গণমাধ্যম ইরাবতিকে বলেন, ‘আজ অফিস-আদালত সব খোলা। তাই স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা-ঘাট ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু আজ অন্য এক ইয়াঙ্গুন দেখেছি। এতটা নীরব ইয়াঙ্গুন মারাত্মক ভয়ংকর।’
তবে রাস্তার মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মহড়া দিতে দেখা গেছে। মান্দালয়ের একটি প্রান্তে সেনাবাহিনীর পক্ষে প্রায় শখানেক মানুষ মিছিল করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে।
সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।