× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ

ফারাক্কায় হাইভোল্টেজ লাইন, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা কলকাতায়

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৩ পিএম

আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৪৯ পিএম

ফারাক্কায় আদানি গ্রুপের হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের ‍বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। প্রতীকী ছবি

ফারাক্কায় আদানি গ্রুপের হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের ‍বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। প্রতীকী ছবি

ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডার আদানি গ্রুপের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এজন্য ভারতের মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় স্থাপন করা হয়েছে হাইভোল্টেজ বিদ্যুতের একটি লাইন। এতে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই আদানি পাওয়ারের ওই হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের বিরুদ্ধে কলকাতার হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছে। 

অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্র্যাটিক রাইটস (এপিডিআর) নামের একটি এনজিও ও স্থানীয় ‍৩০ জন ফলচাষি মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলাটি করেছে। ভারতের সংবাদ সংস্থা ইন্দো-এশিয়া নিউজ সার্ভিসের (আইএএনএসবুধবারের (১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ মামলাটি আমলে নিয়েছেন। ৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। 

মামলার আর্জিতে আবেদনকারীরা বলেন, ফারাক্কার যে অংশ দিয়ে আদানি পাওয়ারের হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনটা যাবে, সেখানকার অধিকাংশ মানুষ আম ও লিচু চাষের ওপর নির্ভরশীল। ওই হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন আম ও লিচু বাগানের ওপর দিয়েই যাবে। এতে করে আম ও লিচুর ফলন ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে জীবন ও জীবিকা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন স্থানীয় ফলচাষীরা। 

এ অবস্থান আবেদনকারীদের অনুরোধ, বিদ্যুৎ লাইনটি অন্য জায়গা দিয়ে করা হোক। জীবন ও জীবিকার উদ্বেগ থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হোক। 

আর্জিতে আরও বলা হয়, আদানি পাওয়ারের ওই বিদ্যুৎ লাইনের বিরুদ্ধে ফলচাষীরা আগেও প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে।

মার্চে দেশে আসার কথা 

গত ৩ জানুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ঝাড়খন্ডের আদানি গ্রুপের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদানির ঝাড়খন্ডের কেন্দ্র থেকে মার্চ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব হবে। এ কেন্দ্র থেকে প্রাথমিকভাবে আমরা ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাব।’

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী গ্রীষ্মে আমাদের চাহিদা মেটাতে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন। এ জন্য আমরা বিকল্প উৎসের সন্ধানে রয়েছি। সুলভমূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করাই আমাদের অগ্রাধিকার। এ জন্য আমরা কাজ করছি।’ 

ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে ইতোমধ্যে একটি ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। চাপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় দুটি উপকেন্দ্র ও ট্রান্সমিশনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। 

২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে ঝাড়খন্ডে ওই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার চুক্তি করে বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে চুক্তিটি ২৫ বছর মেয়াদী। কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট দৈনিক ৮০০ করে মোট ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানি ভারতের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি।  

কতটা লাভজনক

গত ডিসেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ১৬৩ পৃষ্ঠার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির গোপন নথি তাদের হাতে এসেছে। ওয়াশিংটন পোস্টের অনুরোধে তিনজন শিল্প বিশ্লেষক ওই চুক্তি পর্যালোচনা করেছেন। তারা দেখেছেন, ২৫ বছর মেয়াদি এই গোড্ডা চুক্তি বাংলাদেশের জন্য নিতান্তই লাভজনক নয়। প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর বিদ্যুৎ উৎপাদন যতটুকুই হোক না কেন, ক্যাপাসিটি ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় হিসেবে আদানিকে বছরে মোটামুটি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা (৪৫০ মিলিয়ন ডলার) দিতে হবে। সিডনিভিত্তিক জ্বালানি অর্থায়ন বিশ্লেষক টিম বাকলের মতে, ওই রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ জ্বালানি খাতের প্রচলিত দরের তুলনায় অনেক বেশি। 

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বার্ষিক প্রতিবেদনের সূত্র উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য এই প্রকল্প থেকে বিদ্যুতের প্রয়োজন নাও হতে পারে। বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ীই পিক আওয়ারের সর্বোচ্চ চাহিদার ৪০ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। বছরের পর বছর কয়লা ও গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের কারণে বাংলাদেশ এই সক্ষমতা অর্জন করেছে।

দাম পড়বে পাঁচগুণ বেশি

টিম বাকলের মতে, বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতের পাইকারি বাজারের চেয়ে পাঁচগুণেরও বেশি দামে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনবে। এমনকি কয়লার দাম ইউক্রেন যুদ্ধের আগের পর্যায়ে ফিরে এলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের জনসমক্ষে প্রকাশ করা ব্যয়ের চেয়ে আদানির বিদ্যুতে প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টায় ৩৩ শতাংশ বেশি খরচ হবে।

বাংলাদেশের কাপ্তাই সৌর খামারের সঙ্গে তুলনা করলে আদানির বিদ্যুৎ পাঁচগুণ বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে।

সূত্র : আইএএনএস। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা