প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:০১ পিএম
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:১৭ পিএম
পলাতক ‘ক্রিপ্টোকুইন’ রুজা ইগনাটোভা।
‘ক্রিপ্টোকুইন’ নামেই আত্মপ্রচার করতেন রুজা ইগনাটোভা। এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় একমাত্র নারী তিনিই। কিন্তু কী করেছেন এই রুজা?
রুজার ‘ওয়ানকয়েন‘ নামে একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি সংস্থা ছিল। এই সংস্থার মাধ্যমেই বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার তোলেন তিনি।
এই পুরো অর্থ নিয়ে হঠাৎই লাপাত্তা হয়ে যান এই নারী। ২০১৪ সালে যখন সবেমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার বাড়ছে, তখনই এই ফন্দি আঁটেন রুজা। ওয়ানকয়েনের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের থেকে টাকা তুলতে শুরু করেন তিনি।
এই ওয়ানকয়েনকে বিটকয়েনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রচার করতেন তিনি। ২০১৬ সালে তার কারবার তুঙ্গে ওঠে। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ তার এই কয়েনে বিনিয়োগ করেন।
ফলে ২০১৭ সালে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে তাকে আটক করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর সেই সময়ই বুলগেরিয়ার সোফিয়া শহরে একটি বিমানে চড়তে দেখা গিয়েছিল তাকে। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ মেলেনি তার।
গত ৫ বছরে তার হদিস পাননি কেউ। এফবিআইয়ের নথি বলছে, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ সালে তিনি বুলগেরিয়া থেকে গ্রিসের এথেন্সগামী একটি বিমানে চড়েন। তারপর সেখান থেকে সম্ভবত অন্য কোথাও চলে যান। কিন্তু কোথায় গেছেন সেটা কারও জানা নেই।
তিনি সম্ভবত কোনো জার্মান পাসপোর্ট ব্যবহার করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বুলগেরিয়া, জার্মানি, রাশিয়া, গ্রিস বা পূর্ব ইউরোপের কোনো দেশে জনতার ভিড়ে মিশে গিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের মতে, রুজার এই ওয়ানকয়েন এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক জালিয়াতি কাণ্ড। তার এই ভুয়া ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ১০০টিরও বেশি দেশের ৩০ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারী টাকা জমা করেছিলেন।
বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এই বিপুল টাকা তুলতে সম্পূর্ণ ভুয়া দাবি করতেন রুজা। বিনিয়োগকারীদের ধনী করে তোলার স্বপ্ন দেখাতেন। কিন্তু বাস্তবে ওয়ানকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সির কোনো মূল্যই ছিল না।
পুরোটাই আসলে রুজার পরিকল্পনার অংশ ছিল। বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষ, যারা ক্রিপ্টোকারেন্সি জিনিসটি কী, সেটাই বুঝে উঠতে পারেননি, তারাই তার টার্গেট ছিলেন।
রুজা ইগনাটোভা কিন্তু বেশ শিক্ষিত। জার্মানির নাগরিক হলেও তার জন্ম কিন্তু বুলগেরিয়ায়। তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার, মা শিক্ষিকা। রুজা বেশ মেধাবী ছাত্রীও ছিলেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্থান থেকে আইন বিষয়ে পাশ করেন। কাজ করতেন ম্যাকিঞ্জির মতো বড় নামজাদা সংস্থায়।
গোয়েন্দাদের গোপন সূত্রে খবর, সম্ভবত প্লাস্টিক সার্জারি করে মুখই বদলে ফেলেছেন রুজা! ঘোরেন সশস্ত্র দেহরক্ষীদের নিয়ে। ইউরোপের মধ্যেই এদিক-ওদিক ঘোরেন তিনি। তবে এখনও তার সঠিক হদিস কেউ দিতে পারেননি।
সূত্র : ফরচুনডটকম