× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পুতিনের নতুন টার্গেট সমকামী সম্প্রদায়

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৩ এএম

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৫ এএম

ড্যানিয়ার অভিনয় সেন্ট পিটার্সবার্গ ক্লাবের দর্শকরা পছন্দ করতেন। ছবিতে তাকে ওই ক্লাবে পারফর্ম করতে দেখা যাচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

ড্যানিয়ার অভিনয় সেন্ট পিটার্সবার্গ ক্লাবের দর্শকরা পছন্দ করতেন। ছবিতে তাকে ওই ক্লাবে পারফর্ম করতে দেখা যাচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

সেন্ট পিটার্সবার্গে জেন্ডার ব্লেন্ডার নামের একটি ক্লাবে রাতে নিয়মিত পারফর্ম করতেন ২২ বছর বয়সি সমকামী শিল্পী ড্যানিয়া। কিন্তু, গত ডিসেম্বরে রাশিয়ান পার্লামেন্টে একটি নতুন সমকামীবিরোধী আইন পাস হয়। এরপর তার সব শো বাতিল হয়েছে। তাই ড্যানিয়া এখন কর্মহীন।

হ্যালোইনের অনুকরণে ভৌতিক মেকআপের চেহারা নিয়ে ড্যানিয়া গর্ব করে বিবিসি প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি রাশিয়ার একমাত্র দৈত্য ড্র্যাগ কুইন। কিন্তু আইন অনুসারে, আমরা যা করছি তা করা নিষিদ্ধ, আমরা এখন অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছি আমরা।’

মস্কোর ওই নতুন আইনটি সব বয়সিদের মধ্যে ‘অপ্রথাগত যৌন সম্পর্কের প্রচার’ নিষিদ্ধ করেছে। কেউ এই ‘অপরাধ’ করে ধরা পড়লে তাকে ৪ লাখ রুবল পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে।

আইনটি পাস হওয়ার পর ড্যানিয়া রাশিয়া ছেড়ে ফ্রান্সে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, যেখানে ‘শুধু নিজের হওয়া’ বেআইনি, সেখানে থাকতে ভয় হয় আমার। আমার হাত বাঁধা। আমার আর কোনো উপায় নেই। এখানে যা হচ্ছে, সেটা খুবই ভয়ের।’

ইউক্রেনে তথাকথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করার পরপরই মস্কোতে এই আইন পাস হয়। তখন ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়া শুধু ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রেই যুদ্ধ করছে না, বরং পশ্চিমা মূল্যবোধের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করছে। 

সমকামী অধিকারকর্মী পিওত্র ভোজনেসেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের সঙ্গে এই আইনের যোগসূত্র স্পষ্ট। ভোজনেসেনস্কি সেন্ট পিটার্সবার্গে তার ফ্ল্যাটে একটি সমকামী জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে জনসাধারণের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করেছিলেন। কিন্তু নতুন আইন পাস হওয়ার পর এটি তাকে বন্ধ করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আইনটি যুদ্ধ-সম্পর্কিত নেতিবাচক প্রভাব থেকে জনসাধারণের মনোযোগ সরানোর জন্য ক্রেমলিনের একটি প্রচেষ্টা। মস্কোর জন্য বলির পাঁঠা প্রয়োজন ছিল। তারা সেই নতুন বলির পাঁঠা হিসেবে সমকামী মানুষদের খুঁজে পেয়েছে।’

মস্কো কমিউনিটি সেন্টার ফর এলজিবিটি ইনিশিয়েটিভসের ওলগা বারানোভা বিবিসিকে বলেন, ‘ওই নতুন আইন সমকামী সম্প্রদায়কে আরও কলঙ্কিত করবে। আমরা পুরোপুরি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাব, সেখানে আমাদের কাল্পনিক বিয়ে হবে, কাল্পনিক পরিবার হবে। বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তরা দেশ ছেড়ে চলে যাবে। যারা দেশ ছেড়ে যেতে পারবে না, তারা কোনো না কোনোভাবে সঙ্গী খুঁজবে।’

কীভাবে, কখন এবং কার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা হবে, সেটা নিয়ে এখন রাশিয়ার সমকামী সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন। আইনের ভয়ে অনেকেই এখন সেলফ সেন্সরশিপের দিকে যাচ্ছেন। তারা অনলাইনে প্রকাশ করা সমকামী থিমযুক্ত চলচ্চিত্র এবং টিভি সিরিজগুলো মুছে ফেলছেন কিংবা সমকামী দৃশ্যগুলো সম্পাদনা করছেন। অত্যন্ত প্রশংসিত এইচবিও সিরিজ ‘দ্য হোয়াইট লোটাস’-এর একটি পর্বে একটি রাশিয়ান স্ট্রিমিং পরিষেবা ‘সমকামী’ শব্দটির পরিবর্তে ‘মানুষ’ ব্যবহার করেছে। 

সেন্সর করা হচ্ছে বইও। পুরো রাশিয়ার দোকানিরা সমকামী থিমের ওপর বই বিক্রি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেছে। সেন্ট পিটার্সবার্গের দুই পুরুষের মধ্যে রোমান্সের গল্প নিয়ে একটি বইয়ের প্রকাশক বইটি সংশোধন করেছে।

রাশিয়ার ভিটালি মিলনভ নামের একজন আইনপ্রণেতা সমকামী জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিবিসির সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলতে সম্মত হন। আইনটিকে বৈষম্যমূলক এমন অভিযোগ খারিজ করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সম্পর্ক মানুষের ব্যক্তিগত জীবনকে সম্মান করে না।’

যখন ইউক্রেনে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন-এ রকম এক সময়ে সমকামী আইনের ওপর ফোকাস করা উপযুক্ত সময় কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া বিচ্ছিন্ন নয় আর পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে আমাদের বিরোধ রয়েছে। আপনারা কেন আমাদের দিকে ইঙ্গিত করছেন যে, আমাদের মতাদর্শ ভুল?’

ড্যানিয়া বলেন, ‘একটি মুক্ত রাশিয়ার স্বপ্ন দেখি। এমন রাশিয়া চাই, যেখানে এমন মৌলিক মানবাধিকারগুলোকে ক্ষুণ্ন করে না। কারণ, আমি মনে করি, জন্মগতভাবেই এটা আমার অধিকার। এটি বাতিল করার, নিষিদ্ধ করার বা এর জন্য আমার বিচার করার অধিকার কারও নেই।’

সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা