প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫৭ পিএম
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩৩ পিএম
সংবাদ সম্মেলনে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে। ১২ জানুয়ারি দিল্লিতে। ছবি : সংগৃহীত
ভারত-চীন সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও অনুমানযোগ্য নয়। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুত ভারতের সেনাবাহিনী। সীমান্ত বিরোধ মেটাতে কূটনৈতিক ও সামরিক উভয় পর্যায়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে ভারত।
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন। সেনাবাহিনী দিবস সামনে রেখে ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
জেনারেল মনোজ পাণ্ডে বলেন, ‘চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক ও সামরিক উভয় পর্যায়ে আমাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। মূলত সাতটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। পাঁচটি বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার মতো সর্বোচ্চ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’
সাম্প্রতিক সংঘাত
গত ৯ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টর দুই দেশের সেনারা হাতাহাতি ও লাঠালাঠিতে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যাওয়ার আগেই দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আলোচনা শুরু করেন। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত রয়েছে—এমনটাই দাবি করছেন চীন ও ভারতের কর্মকর্তারা।
এশিয়া টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, তাওয়াং সেক্টরের সংঘাতে দুই দেশের অন্তত ৪০ সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। আর চীনা সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএসি) স্ট্যাটাস বদলে দিয়েছে। চীন এলএসি এলাকার প্রায় ৯০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা দখল করে নিয়েছে। অর্থাৎ এসব অঞ্চলে আগে উভয় পক্ষের সেনারা শান্তিপূর্ণভাবে নিয়মিত টহল দিতে পারলেও ভারতের সেনারা এখন সেই অধিকার হারাল।
লাদাখ সংঘাত
তার আগে ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান ভ্যালিতে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ভারত-চীনের সেনারা। তখনও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু বড় রকমের লাঠালাঠি হয়। এতে ভারতের ২০ ও চীনের চার সেনা নিহত হন। আহত হন অনেকে।
সীমান্ত ইস্যুতে ১৯৬২ সালে দুই দেশ একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এ যুদ্ধ ভারত-চীনের পররাষ্ট্রনীতিকে চিরতরে বদলে দিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে আর কোনো যুদ্ধ না হলেও কয়েক বছর পরপরই সীমান্তে সংঘাত হয়েছে। দুই দেশের যৌথ সীমার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার, যার অধিকাংশই অমীমাংসিত।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর ১৫ জানুয়ারি সেনাবাহিনী দিবস উদযাপন করে ভারত। চলতি বছরের দিবসটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল মনোজ পাণ্ডে বলেন, ‘চলতি বছর স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করছে ভারত। জাতীয় ভিশন বাস্তবায়ন করতে সরকারের সব বিভাগের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে সেনাবাহিনী। আমরা সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।