প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২২ ১৬:৫৯ পিএম
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২ ১৮:১৮ পিএম
নিকোল অনাপু মান
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথমবারের মতো যাচ্ছেন এক আদিবাসী নারী নভোচারী। আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার স্পেসএক্স ক্রু-৫ মিশনে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। তার এ অভিযান সফল হলে তিনি হবেন প্রথম আদিবাসী নারী নভোচারী, যিনি মহাকাশ পাড়ি দিয়েছেন।
এ নারীর নাম নিকোল অনাপু মান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাউন্ড ভ্যালি ইন্ডিয়ান আদিবাসীর ওলাইলাকি সম্প্রদায়ের সদস্য। এ সম্প্রদায়ের স্থায়ী বসবাস উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায়। নিকোলের বাড়ি ক্যালিফোর্নিয়ার পেতালুমায়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাসার এ মিশনের কমান্ডার হিসেবে ফ্লাইটের সব দায়িত্ব পালন করবেন নিকোল। নাসা জানিয়েছে, ‘নিকোল মান ২৯ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাচ্ছেন।’
নিকোল অনাপু মান
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান কান্ট্রি টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকালে নিকোল বলেন, ‘এটা খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। আমি মনে করি, এটার গুরুত্ব এ যে এটার মাধ্যমে আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারি। যাতে অন্য আদিবাসী বাচ্চারা উপলব্ধি করতে পারবে যে তাদের সামনে সত্যি কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা তারা দ্রুত ভেঙে ফেলা দরকার।’
নিকোল জানান, এ অভিযানে তাকে ১ দশমিক ৪ কেজি ওজনের ব্যকিত্গত জিনিস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি এমন ড্রিমক্যাচার (স্বপ্নপালক) নেবেন, যা তার মা যখন তিনি তরুণী ছিলেন তখন দিয়েছিলেন।
আদিবাসী সংস্থা মনে করে, এমন ড্রিমক্যাচারের প্রতীকী অর্থ হচ্ছে ঐক্য ও সুরক্ষা দেওয়া।
ক্রু-৫ মিশনের স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে এবার নিকোলের সহযাত্রী হচ্ছেন তিন জন।
এ ছাড়া নিকোলের চন্দ্রাভিযানের অংশ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। নাসার বিশালাকার চাঁদে পাঠানোর রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা তৈরিতেও সহায়তা করেছেন নিকোল অনাপু মান। ২০২০ সালে তিনি নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির জন্য নভোচারী নির্বাচিত হন, যেটি মানুষকে চাঁদে পাঠায়। ওই কর্মসূচির রকেট শিগগির চাঁদে যাচ্ছে।
নিকোল মান যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে লেখাপড়া করেন। পরে তিনি দেশটির নৌবাহিনীর কর্নেল হন। বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধবিমান পরিচালনারও অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
ইরাক ও আফগানিস্তানে অভিযানেও দায়িত্ব পালন করেন নিকোল মান। সামরিক জীবনে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য তিনি ছয়বার পদক পান।
২৫টি আলাদা বিমানে আড়াই হাজার ঘণ্টার বেশি উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। নাসা জানিয়েছে, নিকোল প্রথমে ২০১৩ সালে নভোচারী হন।
নাসার ২১তম মহাকাশ অভিযাত্রী-শ্রেণির আট সদস্যের এক জন হলেন নিকোল। মহাকাশ অভিযানের জন্য তাদের গঠন করা হয়। যাদেরকে চাঁদ ও গ্রহে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে নাসা।
এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে হতে যাওয়া পঞ্চম অভিযান, যেখানে এ অভিযাত্রিক দলটি ২৫০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবে। তাদের পৃথিবীতে থেকে সহায়তা করবে নাসা।
মহাকাশ নিয়ে নিকোল অনাপু মানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ক্রু-৫ অভিযানেই শেষ হচ্ছে না। আর্টেমিস চাঁদ অভিযানের জন্য নির্বাচিত ১৮ নভোচারীর এক জন তিনি। ওই অভিযানে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে চাঁদে পা রাখা প্রথম নারীও হবেন তিনি।
এর আগে ২০০২ সালে জন হেরিংটনই প্রথম আদিবাসী ব্যক্তি, যিনি মহাকাশ সফর করেছেন। চিকাসও সম্প্রদায়ের সদস্য তিনি। তার সফর ছিল ১৩ দিনের।
প্রবা/এইচকে/এমআই