প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫৫ পিএম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:০৭ পিএম
বিজেপি ও আপের কাউন্সিলরদের হট্টগোলে দিল্লি পৌরসভার মেয়র ও উপমেয়র নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ৬ জানুয়ারি দিল্লি পৌরসভা হাউসে। ছবি : সংগৃহীত
দিল্লি পৌরসভা নির্বাচন গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। ওই নির্বাচনে ১৫ বছর পর আম আদমি পার্টির (আপ) কাছে হেরে যায় শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার নবনির্বাচিত কাউন্সিলরা পৌরসভা হাউসে প্রথম বৈঠকে বসেন। উদ্দেশ্য ছিল, মেয়র, উপমেয়রসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক পদের নির্বাচন ও মনোনয়ন সম্পন্ন করা। কিন্তু আপ ও বিজেপির কাউন্সিলরদের হট্টগোলের কারণে তা সম্ভব হয়নি। অনির্দিষ্টকালের জন্য সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে দিল্লি পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা অস্থায়ী স্পিকার সত্য শর্মা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রথমেই তিনি বিজেপি মনোনীত ১০ এল্ডারম্যানের শপথ অনুষ্ঠান শুরু করেন।
শুরুতেই মনোজ কুমারকে এল্ডারম্যান হিসেবে শপথ নিতে আহ্বান জানান সত্য শর্মা। সঙ্গে সঙ্গে আপের কাউন্সিলররা হট্টগোল শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে হাউসের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন স্পিকার।
পৌরপ্রশাসন সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তিদের এল্ডারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হাউসের সিদ্ধান্তে সহায়তা করাই এল্ডারম্যানদের কাজ।
কিন্তু আপের অভিযোগ, কোনো নিয়ম না মেনেই এল্ডারম্যানদের নিয়োগ দিয়েছেন বিজেপি মনোনীত দিল্লির গভর্নর ভি কে সাক্সেনা। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) পৌরহাউসের অস্থায়ী স্পিকারের নাম ঘোষণাও সংবিধান মেনে করা হয়নি বলে অভিযোগ করে আপ।
ভারতের গণমাধ্যম স্ক্রলডটইন জানায়, আপের নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ শুক্রবার অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র, উপমেয়র ও স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য নির্বাচনে সুবিধা পেতে অসাংবিধানিকভাবে এল্ডারম্যান নিয়োগ দিচ্ছে বিজেপি। এটা পৌরহাউসের সাধারণ বৈশিষ্ট্যকে ধ্বংস করবে।’
এদিকে, হাউস মুলতবি ঘোষণা সত্ত্বেও চারজন এল্ডারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতের সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালসহ (এএনআই) নানান গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। তবে, বাকি নির্বাচনের কাজ শেষ করতে হাউসের বৈঠক কবে থেকে ফের শুরু হবে, তা শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে অস্থায়ী স্পিকারের নাম ঘোষণা নিয়ে ওইদিনই ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আপের প্রধান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ওইদিন প্রতিবাদ জানিয়ে গভর্নর ভি কে সাক্সেনার কাছে একটি চিঠি লেখেন কেজরিওয়াল।
গভর্নরের স্পিকার নিয়োগের সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও দিল্লি সরকারের কাজে নগ্ন হস্তক্ষেপ মন্তব্য করে চিঠিতে কেজরিওয়াল লেখেন, ‘গভর্নরের সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ এবং আতঙ্কিত। এটা স্পষ্টতই অসাংবিধানিক, ক্ষমতার অবৈধ চর্চা। গভর্নর হওয়ার পর থেকে তিনি এমনসব কাজ করছেন, যা দিল্লি সরকারের কাজকে বিঘ্নিত করছে।’
তা ছাড়া ডিসেম্বরের পৌরনির্বাচনে প্রভাব কাটাতে দিল্লি গভর্নর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন আপ প্রধান কেজরিওয়াল। চিঠিটা নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন কেজরিওয়াল।
এদিকে, শুক্রবারের মেয়র নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেবে না বলেও ইতঃপূর্বে ঘোষণা দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ইউটার্ন নেয় দলটি। তারা নিজেদের মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে রেখা গুপ্তার নাম ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে শেলি ওবেরয় ও আশু ঠাকুরকে নিজেদের মেয়র পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে আপ ।
ডিসেম্বরে সম্পন্ন দিল্লির পৌর নির্বাচনে ২৫০ আসনের মধ্যে ১৩৪টি পায় আপ। আর বিজেপি পায় ১০৪টি। কংগ্রেস পায় নয়টি।