প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:২০ পিএম
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০৩ পিএম
ট্রাক দিয়ে রাস্তা ব্লক করে সার্বরা। ছবি : সংগৃহীত
কসোভো সীমান্তে সার্বিয়ার যুদ্ধ প্রস্তুতি ঘোষণার পর ইউরোপে তৈরি হওয়া নতুন উত্তেজনার আপাতত অবসান হয়েছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কসোভোয় বসবাসকারী সার্ব প্রতিনিধিদের একটি দল বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সাক্ষাৎ করেছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিকের সঙ্গে।
সার্ব প্রেসিডেন্ট উত্তর কসোভোয় ট্রাক দিয়ে তৈরি করা রাস্তার ব্যারিকেড ভেঙে (সরিয়ে) ফেলতে বলেছেন। কসোভো-সংক্রান্ত বেলগ্রেডসের কমিশনার পিটার পেটকোভিক এক প্রেস কনফারেন্সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কসোভোর সার্ব জনগোষ্ঠীর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা গোরান রাকিক সার্বিয়ার টেলিভিশন চ্যানেল টিভি পিংককে জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার লিখিত গ্যারান্টি পাওয়ার পরই অবরোধ তুলে ফেলার অনুরোধ (সার্বিয়ার পক্ষ থেকে) পেয়েছে তারা।
কসোভোর সংখ্যালঘু সার্বদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে কোনো বিক্ষোভকারীকে (রাকিকের বরাতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী) গ্রেপ্তার করা হবে না এবং কসোভোয় মোতায়েন ন্যাটো সেনাদের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, উত্তর কসোভোয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে না।
এ পদক্ষেপের মাধ্যমে আপাতত উত্তেজনার বরফ গলে গেছে।
বেশ কয়েকজন সার্ব জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে গ্রেপ্তার ও ভারী অস্ত্রসহ আলবেনীয় জাতিগোষ্ঠীর পুলিশ উত্তর কসোভোয় মোতায়েনের ঘটনায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় সংখ্যালঘু সার্বরা।
২০১৩ সালের ব্রাসেলস চুক্তির আলোকে উত্তর কসোভোয় পুলিশ মোতায়েন করতে পারবে না প্রিস্টিনা। কিন্তু আলবিন কুর্তি (কসোভোর প্রধানমন্ত্রী) নেতৃত্বাধীন সরকার স্পষ্ট জানিয়েছিল, ব্রাসেলসের চুক্তিকে সম্মান জানাবেন না তারা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী সার্বিয়া যেকোনো মূল্যে সার্ব জনগোষ্ঠীকে রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এবং সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে এবং উচ্চ যুদ্ধ প্রস্তুতির ঘোষণা দেয়।
বেলগ্রেড ও প্রিস্টিনার উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তে সেনাদের সর্বোচ্চ মাত্রার যুদ্ধ প্রস্তুতির নির্দেশ দেন সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আনুমানিক ৫০ হাজার সার্ব কসোভোর উত্তরাঞ্চলে বাস করে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রাতিস্লাভ গ্যাসিক এক বিবৃতিতে যুদ্ধ প্রস্তুতির বিষয়ে বলেছিলেন, তিনি সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিকের নির্দেশে কাজ করেছেন, যাতে কসোভোয় থাকা সার্ব জনগণের সুরক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
১৯৯৮-৯৯ সালে একটি যুদ্ধের পর ন্যাটোর হস্তক্ষেপে সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয় কসোভো। যেখানে জাতিগতভাবে আলবেনীয়দের বসবাস। পরে ২০০৮ সালে কসোভো আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র ও বেশিরভাগ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্র কসোভোর স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
কসোভোর স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে সার্বিয়া দেশটিকে হুমকি দিয়ে আসছে। কসোভোয় ন্যাটো শান্তিরক্ষী মোতায়েনের পর যুদ্ধ প্রস্তুতির এটিই প্রথম ঘটনা। সার্বিয়ার সামরিক বাহিনী পুরোপুরি রাশিয়ার অস্ত্রনির্ভর এবং দেশটির সঙ্গে ক্রেমলিনের সম্পর্কও বেশ উষ্ণ।