প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:১৭ পিএম
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:১৩ পিএম
তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশাল অঞ্চল। ২৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্কের বাফেলো শহরে। ছবি: সংগৃহীত
কনকনে শীত। তুলার মতো বরফখন্ডের ওড়াউড়ি। তুষারপাতে আচ্ছন্ন ক্রিসমাস ট্রির লাল-নীল আলো। চারদিকে গান ও শিশুদের কোলাহল। এ যেন মর্তে স্বর্গে আমেজ। চিরচেনা বড়দিনের চেহারা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার এবারের বড়দিনের আনন্দ কেড়ে নিল অবিরাম তুষারপাত ও তুষারঝড়, যা স্থানীয়দের মধ্যে বোম্ব সাইক্লোন হিসেবে পরিচিত।
চারদিন ধরে চলা ভয়ংকর বোম্ব সাইক্লোনে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ রাজ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৯ জন। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই কোটি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র ও প্রতিবেশী কানাডায় তুষারঝড়ে নানানভাবে আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় ২৫ কোটি মানুষ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান বোম্ব সাইক্লোন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্য থেকে কানাডার কুইবেক পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মাইলজুড়ে বিস্তৃত। বিশেষ করে কানাডার পার্শ্ববর্তী গ্রেস লেক থেকে মেক্সিকো সীমান্তের রিও গ্র্যান্ডে যে ভয়াবহ তুষারঝড় হচ্ছে, তা স্থানীয় প্রবীণেরা জীবদ্দশায় দেখেননি।
যুক্তরাষ্ট্রে বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে মিনেসোটা, আইওয়া, উইসকনসিন, মিশিগান, ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক অন্যতম। শনিবার সন্ধ্যায় মন্টানার তাপমাত্রা মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে।
দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে তিন হাজারের বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এতে বড়দিনে যারা নিজ শহরে বা গ্রামে যেতে চেয়েছিলেন, তাদের অনেকে বেশ হতাশ। বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন অনেকে।
ওয়াশিংটনের সিয়াটলে আটকা পড়া জন হ্যারি নামের এক ব্যক্তি বিবিসিকে বলেন, ‘বুড়ো মা-বাবার সঙ্গে বড়দিন পালন করতে আমার ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে যাওয়ার কথা। কিন্তু দুদিন ধরে বিমানবন্দরে বন্দি হয়ে আছি। এবারের বড়দিন মাটি হয়ে গেলো।’
দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো। বিদ্যুৎ বিভাগ যতটা সম্ভব বিদ্যুৎ অপচয় বন্ধ করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল বলেন, ‘অনেকে আমাদের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করছেন। কিন্তু আমাদের যত গাড়িই থাকুক না কেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা চলাচল করতে পারছে না। রাস্তায় বের করা যাচ্ছে না।
তুষারঝড়ে হিমশীতল হয়ে পড়া কানাডার অন্টারিও, ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও নিউফাউন্ডল্যান্ডের অবস্থাও অত্যন্ত শোচনীয়। এসব অঞ্চলে হাজার হাজার গাড়ি তুষারে ঢাকা পড়েছে। কানাডায় তুষারঝড়ে অনেকগুলো গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আলজাজিরার প্রতিদেনে। কিন্তু দুর্ঘটনা বা হতাহতের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।