প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:১৪ পিএম
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৪৯ পিএম
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে চীনে। ছবি : সংগৃহীত
বিক্ষোভের মুখে শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে আসায় চীনে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আঘাত হানার ফলে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বেইজিংসহ দেশটির অন্যান্য শহরের হাসপাতালগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) চীনের হাসপাতালগুলোর পরিস্থিতি এমনটাই বলে মনে করছে।
সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান ডঃ মাইকেল রায়ান জানিয়েছেন, চীনের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) কর্মীদের ওপর চাপ বাড়ছে। যদিও দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, আইসিইউতে রোগীর সংখা তুলনামূলক কম।
চীনের সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মঙ্গলবার কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৫ জন ও সোমবার ২ জন মারা গেছেন। আর বুধবারে কেউই মারা যায়নি।
ডক্টর রায়ান চীনকে ভাইরাসের বিস্তার সম্পর্কিত আরও তথ্য সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে। রোগের তীব্রতা, কত জনের আইসিইউর প্রয়োজন হচ্ছে, এই ধরণের তথ্য চাইছে ডব্লিউএইচও।
চীন যেই সংখ্যার কথা বলছে তাতে আইসিইউতে রোগীর সংখ্যা কম থাকার কথা। কিন্তু ডব্লিউএইচও বলছে, বাস্তবতা এর বিপরীত।
এদিকে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস জানিয়েছেন, চীনের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি।
চীনজুড়ে কোভিড বিধিনিষেধের শিথিলতায় সংক্রমণ বেড়েছে এবং সম্ভবত শীতকালে এর সংক্রমণ আরও বাড়বে। কিছু অনুমান এমনও বলছে, চীন ২০২৩ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১০ লাখের বেশি মৃত্যু দেখতে যাচ্ছে।
পিকিং ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট হাসপাতালের শ্বাসযন্ত্র বিশেষজ্ঞ ওয়াং গুয়াংফা মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই দ্রুত কাজ করতে হবে, স্পেশাল ক্লিনিক, জরুরি ও গুরুতর চিকিৎসাব্যবস্থা প্রস্তুত করতে হবে।’
ওয়াংয়ের মতে, হাসপাতালগুলোকে এখনই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইসিইউ শয্যা বাড়াতে হবে। জানুয়ারি পর্যন্ত কোভিড-১৯ বৃদ্ধি পাবে, এরপর কমতে থাকবে। ফেব্রুয়ারির শেষ ও মার্চের শুরুতে জীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
একই সঙ্গে পিকিং ইউনিভার্সিটির এই গবেষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ভাইরাসটির মিউটেশন হয়ে আরও ভয়াবহ আকারে মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে।
তবে চীনের জিরো কোভিড নীতি দেশটির অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হলেও এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে নাগরিক জীবনে চাপ সৃষ্টি করলেও বৈশ্বিক মহামারির চলমান সময়েও দেশটির জনগণ ভাইরাস থেকে বেশ নিরাপদেই ছিল।
কিন্তু এরই মধ্যে চীনের পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। দেশটির কিছু হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যায় এখন আর নতুন রোগী জায়গা দেওয়ার উপায় নেই। কিছু শহরে ওষুধ ও রক্তের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফার্মেসিগুলোর তাক খালি হয়ে গেছে।
দেশের উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম পর্যন্ত, শ্মশানের কর্মীরা ফ্রান্স-প্রেসকে বলেছেন যে তারা মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় রীতিমতো লড়াই করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, চীনকে তারা সহায়তা করতে প্রস্তুত।