× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাত নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে রাহুল গান্ধী

প্রবা ডেস্ক

প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৪৩ পিএম

আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৫৭ পিএম

ভারত-চীনের সেনাদের সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে শুক্রবার মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধী। তা নিয়ে সমালোচনায় মুখর বিজেপির শীর্ষ নেতারা। রাজনাথ সিং, যোগী আদিথ্যনাথ এবং জেপি নাড্ডা (সর্ব ডান থেকে ঘড়ির কাঁটায়)।

ভারত-চীনের সেনাদের সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে শুক্রবার মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধী। তা নিয়ে সমালোচনায় মুখর বিজেপির শীর্ষ নেতারা। রাজনাথ সিং, যোগী আদিথ্যনাথ এবং জেপি নাড্ডা (সর্ব ডান থেকে ঘড়ির কাঁটায়)।

ভারতের অরুণাচল প্রদেশে সম্প্রতি ভারত-চীনের সেনারা লাঠালাঠিতে জড়িয়ে পড়ে। এটা নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুক্রবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, ‘চীন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু বিজেপি সরকার তা ধামাচাপা দিচ্ছে।’ রাহুলের এ অভিযোগ নিয়ে বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অনেকে তাকে ক্ষমা চাইতে আহ্বান জানিয়েছেন। 

ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) ৯৫তম বার্ষিক সভায় শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) কথা বলছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। রাহুলের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজনাথ সিং বলেন, ‘কোনো বিষয়ে বিরোধী দলের নেতাদের মনোভাব নিয়ে আমরা তো কখনও প্রশ্ন করিনি। আমরা সবসময় নীতি নিয়ে কথা বলি। তাদের এ ধনের প্রশ্ন আমি বুঝতে পারি না। গ্যালওয়ানে (২০২০ সালে) বা তাওয়াংয়ে (গত ৯ ডিসেম্বর) আমাদের সেনারা সবসময় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ এটা নিয়েও তাদের প্রশ্ন।’

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডাও শনিবার এক বিবৃতিতে রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করেছেন। জেপি নাড্ডা বলেন, ‘রাহুল গান্ধীর মন্তব্য আমাদের সেনাবাহিনীর মনোবলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি যে মন্তব্য করেছেন, সেজন্য যতই তার সমালোচনা করা হোক, তা কম করা হবে। ভারতের সেনাবাহিনী আমাদের সাহসিকতা ও বীরত্বের প্রতীক। দকলাম সংঘাতের (২০১৭ সালে ভুটান সীমান্তে) রাহুল গান্ধী চীনা দূতাবাসে কেন গিয়েছিলেন, জনগণ তা জানতে চায়।’

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য অবমাননাকর উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে আহ্বান জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আদিত্যনাথ বলেন, ‘রাহুল গান্ধী একজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি একসময় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্টও ছিলেন। কিন্তু তার মন্তব্য শিশুসুলভ। ভারতের সেনাবাহিনীর জন্য অপমানজনক। ভারত যখনই কোনো চ্যালেঞ্জে পড়েছে, তখনই রাহুল গান্ধীর প্রকৃত চরিত্র বেরিয়ে পড়েছে। নিজের মন্তব্যের জন্য তাকে ভারতের সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’ 

শনিবার রাহুলের মন্তব্যের আরও যারা সমালোচনা করেছেন, তাদের মধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সংসদীয় আসনের এমপি কিরেন রিজিজু অন্যতম। সংঘর্ষের পর তাওয়াং সফরের ছবি টুইটারে পোস্ট করে কিরেন রিজিজু লেখেন, ‘এটা আমার তাওয়াংয়ের ইয়াগতসে এলাকার ছবি। অরুণাচল প্রদেশ সম্পূর্ণ নিরাপদ। এখানে সেনাবাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।’

রাহুল গান্ধীর মন্তব্য

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, চীন নিজের সীমা বাড়াচ্ছে শুধু তা নয়, বরং তারা যুদ্ধেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে। দুই বছর ধরে আমি এসব বলে আসছি। কিন্তু সরকার তা লুকাতে চেষ্টা করছে।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কংগ্রেসের ‘ভারত জুড়ো যাত্রা’ শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) শততম দিন পূর্ণ করে। রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে এদিন দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন রাহুল গান্ধী। রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, সরকার ঘুমাচ্ছে। সরকার অপ্রিয় সত্য কথা শুনতে চাচ্ছে না। চীনা সেনারা যেসব অস্ত্র ব্যবহার করছে, তা খেয়াল করলে বুঝবেন, তারা স্পষ্টত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। 

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকার চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত পাল্টা পদক্ষেপ নিতেও ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করেন কংগ্রেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী। তার অভিযোগ, সরকার ঘটনাভিত্তিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি যখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনীতির কোনো বিষয় হয়, সেখানে তো ঘটনাভিত্তিক সমাধান কাজ করে না।

১৬ ডিসেম্বর জয়পুরে  রাহুল গান্ধী । ছবি : সংগৃহীত

অরুণাচলে সংঘাত

অরুণাচল সীমান্তে ৯ ডিসেম্বর ভারত ও চীনের সেনারা লাঠালাঠিতে জড়িয়ে পড়ে। এটা নিয়ে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) লোকসভায় বড় পরিসরে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) এমপিরা। কিন্তু বিজেপির স্পিকার ওম বিরলা সেই সুযোগ দেননি। এ অবস্থায় সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে বিরোধী এমপিরা ওইদিন লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। 

২০২০ সালের জুনে লাদাখ সীমান্তে চীন-ভারতের সেনাদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত হয়। এতে ভারতের অন্তত ২০ সেনা নিহত হয়। চীনের কত সেনা নিহত হয়, তা স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে চীনা কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের মাত্র ৫ সেনা নিহত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, চীনের নিহত সেনার সংখ্যা অন্তত ৪৫। 

এ সংঘর্ষের পর দুপক্ষের স্থানীয় কমান্ডাররা দফায় দফায় বৈঠক করেন। অনেকগুলো বৈঠকের পর পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে যেতে সম্মত হয় চীন। এরপর ৯ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত দুদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত ছিল বলা যায়।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

ভারত বৃহস্পতিবার নিজেদের তৈরি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫-এর আরেকটি সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। পারমাণবিক ওয়ারহেড বা বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটি ৫ হাজার ৪০০ কিলোমিটারের বেশি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। চীন সীমান্তবর্তী ভারতের কোনো স্থান থেকে এটি বেইজিংয়ে আঘাত হানতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে। 

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানায়, ওড়িশা উপকূলের আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একটি অগ্নি-৫ আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এটি অগ্নি-৫-এর নবম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ। এ সিরিজের যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আগে পরীক্ষা করা হয়েছে, সেগুলোর দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা বৃহস্পতিবারেরটির চেয়ে কম। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অগ্নি-৫-এর এ পরীক্ষার সূচি আগেই নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশে ভারত-চীনের সেনাদের সাম্প্রতিক লাঠালাঠির ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি নিয়মিত পরীক্ষা। ভারত অগ্নি-৫-এর প্রথম পরীক্ষা চালায় ২০১২ সালে। 

১৫ ডিসেম্বর নিজেদের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫-এর নবম পরীক্ষা চালায় ভারত। ছবি : সংগৃহীত 

বৃহস্পতিবার অগ্নি-৫-এর পরীক্ষা চালানোর পর চীনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ইতঃপূর্বে চীন অভিযোগ করেছিল, অগ্নি-৫-এর পাল্লা নিয়ে তথ্য লুকাচ্ছে ভারত। এটি অন্তত আট হাজার কিলোমিটার দূরের বস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। 

ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ বলছে, অগ্নি-৫ পরীক্ষার সঙ্গে অরুণাচলের সাম্প্রতিক ঘটনার সম্পর্ক নেই। কিন্তু গণমাধ্যমগুলোর সংবাদ পরিবেশনে বৃহস্পতিবারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সঙ্গে অরুণাচলে ভারত-চীনের সেনাদের সংঘাতের একটা পরোক্ষ সম্পর্ক আছে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার চীনকে তোয়াজ করে চলে না, জনমনে এমন একটি বার্তা দিতেই অগ্নি-৫-এর নবম পরীক্ষা চালানো হয়েছে, এমন একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায় এনডিটিভিসহ ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে।



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা