প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৫৮ পিএম
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:১০ পিএম
অরুণাচলে ভারত-চীন সেনাদের সংঘাত নিয়ে আলোচনার সুযোগ না দেওয়ায় লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস ও তৃণমূলের এমপিরা। ছবি : সংগৃহীত
অরুণাচল সীমান্তে ৯ ডিসেম্বর ভারত ও চীনের সেনারা হাতাহাতি-সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। এটা নিয়ে বুধবার লোকসভায় বড় পরিসরে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) এমপিরা। কিন্তু বিজেপির স্পিকার ওম বিরলা সেই সুযোগ দেননি। এ অবস্থায় সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে বিরোধী এমপিরা বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ওয়াকআউট করেন।
ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ভারত-চীনের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই। ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের সময় এ হাউসে ১৬৫ এমপি কথা বলেছিলেন। তাদের আলোচনার ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণ করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। বর্তমান পরিস্থিতে আমরাও তেমনটা চাই।’
কিন্তু স্পিকার ওম বিরলা সে সুযোগ না দিয়ে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শেষে অন্য পর্বে চলে যান। তখন প্রতিবাদ হিসেবে সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের নেতারা লোকসভা ত্যাগ করেন। তাদের পরপর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে টিএমসির এমপিরাও লোকসভা ত্যাগ করেন।
ভারতের পাশে যুক্তরাষ্ট্র
স্ক্রলডটইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অরুণাচলে চীন-ভারতের সংঘাত নিয়ে মন্তব্য করছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগন। পেন্টাগনের প্রেস সবিচ প্যাট্রিক রাইডার মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, ‘অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরে ৯ ডিসেম্বর যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার নিরসন চায় যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে ভারতকে পূর্ণ সহযোগিতা দেবে ওয়াশিংটন।’
এ মার্কিন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা ক্রমশ লক্ষ করছি যে, পিআরসি (গণপ্রজাতন্ত্রী চীন) ইন্দো-প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও সহযোগীদের অবিরাম কোণঠাসা করতে চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় আমরা আমাদের মিত্র ও সহযোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পিছপা হব না।’
রাজনাথের ব্যাখ্যা
৯ ডিসেম্বরের ঘটনা প্রসঙ্গে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) লোকসভায় ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘চীন ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণরেখা (এএসি) বাড়াতে চেষ্টা করছিল। এতে আমাদের সেনারা বাধা দেয়। ফলে চীনের সেনাদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। তবে গুরুতর কিছু হয়নি। কোনো সেনা প্রাণ হারায়নি।’
কিন্তু প্রকৃত ঘটনা আরও বড় বলে মনে করেন ভারতের বিরোধী দলের নেতারা। কোনো কোনো রাজনীতিবিদ ঘটনায় কিছু সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও মনে করেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে।
এর আগে ২০২০ সালের জুনে লাদাখ সীমান্তে চীন-ভারতের সেনাদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত হয়। এতে ভারতের অন্তত ২০ সেনা নিহত হয়। চীনের কত সেনা নিহত হয়, তা স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে চীনা কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের মাত্র ৫ সেনা নিহত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, চীনের নিহত সেনার সংখ্যা অন্তত ৪৫।
এ সংঘের্ষর পর দুপক্ষের স্থানীয় কমান্ডাররা দফায় দফায় বৈঠক করেন। অনেকগুলো বৈঠকের পর পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে যেতে সম্মত হয় চীন। এরপর ৯ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত দুদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত ছিল বলা যায়।