প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫ ১৫:১১ পিএম
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫ ০১:৩৬ এএম
লাইসেন্সবিহীন রত্ন ব্যবসা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে একজন চীনা ব্যবসায়ীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ কোটি ১০ লাখ টাকারও বেশি জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে কলম্বো হাইকোর্ট।
চীনা নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় পদ্ধতিগতভাবে একটি সমান্তরাল রত্ন ব্যবসা অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এবং বৈধ ব্যবসার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে।
বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত সিলন নীলকান্তের মতো উচ্চমানের রত্নপাথরের জন্য বিখ্যাত শ্রীলঙ্কা। তবে চীনা সম্পৃক্ততার কারণে অবৈধ বাণিজ্য বাড়ছে। বিদেশী ক্রেতারা, বিশেষ করে চীনা ব্যক্তিরা, প্রায়শই ভিজিট ভিসায় শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ করে এবং ব্যাপক রত্ন ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিয়ন্ত্রক তদারকি এবং কর সংগ্রহকে এড়িয়ে সরাসরি নগদ লেনদেনকে পছন্দ করে তারা। ফলে আর্থিক ট্র্যাকিং এবং ভ্যাট প্রয়োগ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কায়।
চীনা ব্যবসায়ীরা ঐতিহ্যবাহী নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এড়িয়ে সরাসরি রত্ন খনির এলাকায় প্রবেশ করে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলিকে শোষণ করে। তারা "নতুন শ্রেণীর তরুণ মধ্যস্থতাকারীদের" সুবিধা গ্রহণ করে যারা সরাসরি খনি শ্রমিকদের কাছ থেকে নগদ অর্থের জন্য ক্রয় করে। এটা কেবল আনুষ্ঠানিক পথকেই ফাঁকি দেয় না বরং সামাজিক বৈষম্যকেও আরও বাড়িয়ে তোলে। কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিক দরিদ্র এবং প্রাথমিক শ্রমিকদের জমির মালিকানার নিরাপত্তাহীনতা, দারিদ্র্য এবং খনির দুর্ঘটনার মতো সমস্যাগুলির ঝুঁকিতে ফেলে।
আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের পছন্দে লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে। ইউরোপীয় এবং আমেরিকান ক্রেতারা ক্রমবর্ধমানভাবে থাইল্যান্ডের মতো বিকল্প কেন্দ্র বেছে নিচ্ছে, যা শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দেশটি সরকারি কর রাজস্ব এবং বৈদেশিক মুদ্রায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অনানুষ্ঠানিক এবং করমুক্ত লেনদেনের কারণে আনুমানিক ৩৮ বিলিয়ন টাকা বার্ষিক ভ্যাট হারানো হচ্ছে।
সাম্প্রতিক হাইকোর্ট মামলার বাইরেও অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। এক চীনা দম্পতিকে ৫০ মিলিয়ন রুপি মূল্যের ১৭৫টি রত্নপাথর পাচার করার চেষ্টা করার সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আরেক ঘটনায় বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক চীনা বাবা ও মেয়েকে তাদের অন্তর্বাসে লুকানো ৬৮৯.৫ গ্রাম বিভিন্ন উচ্চ-মূল্যের রত্নপাথরসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যার মূল্য ১৭.৪৫ মিলিয়ন রুপি।