প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫ ০৯:১৯ এএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড পুরোপুরি দখলে না নেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতির কোনও স্থায়ী চুক্তিতে রাজি নন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বুধবার জেরুজালেমে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা জানি, গাজায় এখনও অন্তত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দি জীবিত রয়েছে এবং আরও প্রায় ৩৮ জন সম্ভবত নিহত হয়েছেন।’
এদিকে, ইসরায়েলে এখনও অন্তত ১০ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন- যাদের অনেকেই নির্যাতন, অনাহার ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
নেতানিয়াহু বলেন, শুধুমাত্র বন্দিদের উদ্ধারের জন্য স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি বিবেচনায় আনা হতে পারে। তবে এটিকে ‘অস্থায়ী বিরতি’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে হামাস বারবার জানিয়েছে, তারা সমস্ত ইসরায়েলি বন্দিকে একক বিনিময়ে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, যদি ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করে, গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নেয় এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়। কিন্তু নেতানিয়াহু এই শর্তগুলো পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং গাজা থেকে হামাসকে উৎখাত, তাদের পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা পুনর্দখল করার কথা জোর দিয়ে বলেছেন।
অবশ্য ইসরায়েলের বিরোধী নেতারা এবং বন্দিদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু চরম ডানপন্থি জোটসঙ্গীদের খুশি রাখতে এবং নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন।
বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ বলেন, ‘নেতানিয়াহুর বক্তব্যের মানে হলো আগামী বহু বছর গাজা দখলে রাখা হবে।’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয়ের কথা বলে নেতানিয়াহু মিথ্যা বলছেন।
অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান বলেন, ‘আমি দেখলাম এক চাপে ভেঙে পড়া, মিথ্যা বলা, দায়িত্ব এড়ানো এক নেতার প্রহসন।’ তিনি ঘোষণা দেন, ‘নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আমি মানহানির মামলা করব এবং খুব শিগগিরই নির্বাচনে তাকে পরাজিত করব।’
এছাড়া গাজায় বন্দি থাকা ব্যক্তিদের পরিবারের ফোরাম এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা হয়তো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সুযোগ হারাতে চলেছি। ১৯ মাস পার হলেও এই যুদ্ধের কোনও শেষ নেই, পুনর্গঠনেরও কোনও সম্ভাবনা নেই।’