প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:১৮ পিএম
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৫১ পিএম
খাশোগি হত্যায় এমবিএসকে দায়মুক্তি দিলেও আদালত নিজের অস্বস্তির কথাও জানিয়েছেন। ছবি : সংগৃহীত
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার বিষয়ে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) বিরুদ্ধে করা একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত।
রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে যুবরাজ সালমানের ইমিউনিটি (দায়মুক্তি) রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই সালমানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) মামলা খারিজ করলেন আদালত।
২৫ পৃষ্ঠার ফাইলিংয়ে আদালত নিজেই জানিয়েছেন খারিজের ক্ষেত্রে আদালতেরই অস্বস্তি ছিল।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই যুবরাজ এমবিএসের বাবা বাদশাহ সালমান তাকে সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। এই পদক্ষেপ কার্যত শাসক থেকে তার পদকে আনুষ্ঠানিক শাসকের ভূমিকায় নিয়ে আসে, যদিও নিয়মানুযায়ী রাজাই রাষ্ট্রপ্রধান।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং বিশ্লেষক মনে করেন, যুবরাজের ইমিউনিটি নিশ্চিত করার জন্যই রাজা এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন।
যুবরাজও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই আদালতকে বলেছিলেন, আইনি ভিত্তিতে তার ইমিউনিটি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ থেকেও ১৭ নভেম্বর আদালতকে দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়, যুবরাজ সালমানের অফিসে (প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে) থাকাকালীন তার ইমিউনিটি পাওয়া উচিত।
তবে পররাষ্ট্র বিভাগ একই সঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ করেছে, এই মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ কোনো পক্ষ নিচ্ছে না। একই সঙ্গে খাশোগির হত্যার দ্যর্থহীন নিন্দার পুনরাবৃত্তিও করেছে।
খাশোগির বাগদত্তা হ্যাতিস চেঙ্গিজের পক্ষ থেকে দায়ের করা এই মামলায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছিল। খাশোগি ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে তার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই সৌদি এজেন্টদের হাতে তিনি নিহত হন।
হাতিস চেঙ্গিজের হয়ে মামলা দায়ের করা সারাহ লিয়া হুইটসন টুইটারে লিখেছেন, আদালতের সিদ্ধান্ত ‘জবাবদিহিতার জন্য দুঃখজনক সংবাদ।’
লিয়া হুইটসন, ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ অ্যাডভোকেসি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক। তিনি জানিয়েছেন, আদালতের সিদ্ধান্তে আইনজীবীদের সঙ্গে তারা পরামর্শ করছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
ভার্জিনিয়ার ডেমোক্রেট সিনেটর টিম কাইন এক লিখিত বিবৃতিতে আদালতের এই সিদ্ধান্তে গভীর হতাশার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত খাশোগির পরিবারকে দেওয়া বাইডেনের প্রতিশ্রুতির বিপরীত। তার (খাশোগি) পরিবার ও প্রিয়জন ন্যায়বিচার পাওয়ার যোগ্য।
জামাল খাশোগি ছিলেন সৌদি ভিন্নমতাবলম্বীদের একজন। যিনি ওয়াশিংটন পোস্টে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও সরকারের সমালোচনা করে কলাম লিখেছিলেন। ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং পরে তাকে টুকরো টুকরো করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, এ ঘটনায় স্বয়ং যুক্ত সালমান, তিনি হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনও শুরুর দিকে সালমান থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই চলতেন। সম্প্রতি তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেন, এমনকি চলতি বছর সৌদি সফরে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে বাইডেন সাক্ষাৎও করেন।