প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:১৮ এএম
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪০ এএম
ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর (আইএএফ) দিনভর হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ৫১ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
ওয়াফা নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রথম হামলার ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে। এতে নিহত হয় ৯ জন। একই সময়ে নিকটবর্তী আল শরিফ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালায় আইএএফ। এতে নিহত হয় ৪ জন।
গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিতে নিহত হয়েছে মোট ১৯ জন। এর মধ্যে ৯ জন শহরের মধ্যাঞ্চল, ৩ জন দক্ষিণ গাজা সিটি এবং ৭ জন উত্তর গাজা সিটির বাসিন্দা। উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে নিহত হয় আরও ১০ জন। এ ছাড়া উত্তর গাজার বেইত লাহা উপশহরে নিহত হয়েছে ৯ জন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। সোমবারের অভিযানের পর গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহত ও আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৩০০ এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬-তে। হতাহতের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালান গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যান তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিনই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল; কিন্তু বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই জিম্মিদের মুক্তি ও তার বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে অন্তরিন ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দেওয়া নিয়ে মতানৈক্য হওয়ায় ১৮ মার্চ ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ৩৮ দিনে গাজায় নিহত হয়েছে ২ হাজার ৬০ জন। আহত হয়েছে ৫ হাজার ৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, যে ২৫১ জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছেন। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এ অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্যপূরণ হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।