গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় এক দিনে কমপক্ষে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। এখন পর্যন্ত এ উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ৯০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং আরও ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে চিকিৎসাসূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছেন। রাতভর গাজায় হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা আনাদোলু বলছে, গাজা উপত্যকায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ৩০৫-এ পৌঁছেছে বলে বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ১০৫ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬-এ পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

জানা গেছে, দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দুই মাস গাজায় কমবেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্য কেন্দ্র করে মার্চের তৃতীয় সপ্তায় ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। ইসরায়েলের বর্বর এ হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিও ভেঙে দিয়েছে।

জাতিসংঘের মতে ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এ ছাড়া এ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।