ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মিয়ানমার গেল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

রবিবার (৩০ মার্চ) সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে বিশেষ বিমানে এ সহায়তা পাঠিয়েছে সরকার। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাদ্য ও ওষুধসহ জরুরি উপকরণ পাঠানো হয়। আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এ তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, গত ২৮ মার্চ স্থানীয় সময় ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৬৪৪ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৪০৮ জন আহত হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে এ ভূমিকম্পের ফলে খাদ্য, পানি ও বাসস্থান সংকট এবং জরুরি চিকিৎসার অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের এ মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত।

আইএসপিআর আরও জানায়, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে, বাংলাদেশ হতে মিয়ানমারে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী হিসেবে ওষুধ, তাঁবু, শুকনা খাবার এবং উদ্ধার ও চিকিৎসাসেবা দিতে উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তা দল পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩০ মার্চ ১২টা ৩৫ মিনিটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি পরিবহন বিমান জরুরি ত্রাণসামগ্রীসহ মিয়ানমারের ইয়াংগুনের উদ্দেশে রওনা করেছে এবং ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর শেষে তারা প্রত্যাবর্তন করবে। আজ পাঠানো সাড়ে ১৬ টন ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে শুকনো রেশন, বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন, তাঁবু, হাইজিন প্রোডাক্টসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য সামগ্রী।

উল্লেখ্য যে, আজ যে ত্রাণসামগ্রী মিয়ানমারে পাঠানো হচ্ছে তা পরিকল্পিত ত্রাণ সহায়তার একটি অংশমাত্র। পরবর্তীতে মিয়ানমার সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আরও ত্রাণ সহায়তা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল পাঠানো হবে। উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স হতে ১০ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে ১০ সদস্য এবং অসামরিক ডাক্তারদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যের দুটি মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো এ সহায়তা মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য সদা অঙ্গীকারবদ্ধ।