প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৬:১৪ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৭:১৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে ওয়াশিংটনের নিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিত রাসুলকে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিরল এ পদক্ষেপের ঘোষণা দেওয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ‘আমাদের মহান দেশে তিনি (ইব্রাহিত রাসুল) আর বাঞ্ছিত নন।’
শনিবার (১৫ মার্চ) দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওয়াশিংটনের এ সিদ্ধান্তকে ‘দুঃখজনক’ অভিহিত করেছে। প্রেসিডেন্ট কার্যালয় জানিয়েছে, তারা এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক গড়তে বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযাগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া পোস্টে রুবিও রাসুলের বিরুদ্ধে ট্রাম্প ও আমেরিকাকে ঘৃণা করার অভিযোগ আনেন এবং তাকে ‘বর্ণ-বিদ্বেষী রাজনৈতিক’ অ্যাখ্যা দেন,। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল, তার মধ্যে রাষ্ট্রদূত বহিষ্কারের এই বিরল পদক্ষেপ এলো।
এক্সে দেওয়া পোস্টে রুবিও ডানপন্থিদের গণমাধ্যম ব্রেইটবার্টের একটি লিংকও যুক্ত করে দেন, যেখানে এক অনলাইন বক্তৃতায় ট্রাম্প প্রশাসনে নিয়ে রাসুলের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য সংকলিত হয়েছে।
ওই বক্তৃতায় ইব্রাহিত বলেছিলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যা শুরু করছেন তা হল ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের উপর আক্রমণ, দেশে এবং বিদেশে ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের ওপর শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদকে চাপিয়ে দেওয়া।’
যুক্তরাষ্ট্রে যে বড় ধরনের জনমিতিক পরিবর্তন ঘটেছে, ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট অ্যাগেইন’ তার প্রতিক্রিয়া, বলেছেন তিনি।
ইব্রাহিতের ভাষ্যমতে, তথ্য উপাত্তেই জনমিতিক এ পরিবর্তন ধরা পড়ছে, এর ফলে ইলেকটোরেট ভোটিংয়ে শ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা ৪৮ শতাংশে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় রুবিও তাকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ বা ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করেন।
ট্রাম্প দায়িত্বগ্রহণের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্ক অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত মাসে ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকা নার্সদের ওপর ‘অন্যায্য বর্ণবাদী বৈষম্যের’ অভিযোগ তুলে দক্ষিণ আফ্রিকায় সহায়তা বন্ধ করে দেন। এই আফ্রিকা নার্সরা মূলত ডাচ বসতি স্থাপনকারীদের বংশধর।
‘যতক্ষণ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্ব মঞ্চে নেতিবাচক শক্তিগুলোকে সমর্থন দেবে এবং নিরীহ সুবিধাবঞ্চিত সংখ্যালঘু কৃষকদের উপর সহিংস হামলার সুযোগ দেবে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ থাকবে,’ বিবৃতিতে বলেছে হোয়াইট হাউজ।
দক্ষিণ আফ্রিকা এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই নিম্নপদস্থ কূটনীতিকদের বহিষ্কার হতে দেখা গেলেও, রাষ্ট্রদূত বহিষ্কার বিরল-ই বলা চলে। স্নায়ুযুদ্ধের সময়ও যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ইব্রাহিত ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ছিলেন; এ বছর ফের তাকে একই পদে আনা হয়েছিল।
কেপটাউনে জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইব্রাহিত নয় বছর বয়সে পরিবারসহ এক ফ্ল্যাট থেকে উচ্ছেদ হয়েছিলেন, যে ফ্ল্যাটকে কেবল শ্বেতাঙ্গদের জন্যই নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছিল।