ওয়াশিংটনে মোদির সঙ্গে বৈঠক
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০৮ পিএম
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:১০ পিএম
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাণিজ্য, অভিবাসন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে ভারতীয় সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়ে আপনার অভিমত কী? এটা স্পষ্ট যে বাইডেন প্রশাসনের আমলে মার্কিন ডিপ স্টেট বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনে জড়িত ছিল। মুহাম্মদ ইউনূসও জুনিয়র সরোসের সঙ্গে দেখা করেছেন। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?’
জবাবে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা এমন একটি বিষয়, যেটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (মোদি) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং সত্য বলতে, শত শত বছর ধরে এটি নিয়ে কাজ চলছে। তবে আমি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর (মোদির) ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।’
তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে গেছেন নরেন্দ্র মোদি। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইস্যুতে কোনো কথাও বলেননি তিনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ টেনে মোদি ট্রাম্পের শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, বিশ্ব জনমত বলছে, ভারত এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ থেকেছে। তবে আমি স্পষ্ট করতে চাই—ভারত নিরপেক্ষ ছিল না, বরং সবসময় শান্তির পক্ষে ছিল।
বৈঠকে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ওপরও জোর দেওয়া হয়। মোদি বলেন, আমার ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে একটি বিষয়ে মিল রয়েছে—আমরা দুজনেই আমাদের দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেই। ট্রাম্পও মোদির প্রশংসা করে বলেন, মোদি ভারতে অসাধারণ কাজ করছেন। আমাদের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব রয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনটিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের চিত্র ফুটে উঠেছে।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ফ্যাসিস্ট ছিল। আমি ভারতকে অনুরোধ করছি যেন তাকে বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবারও স্মারকলিপি পাঠানো হতে পারে, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের সামনের পথ।
সূত্র : এনডিটিভি