নিউ এজের প্রতিবেদন
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৩৮ এএম
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৩ এএম
সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় আটটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। সেই সঙ্গে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর তদন্তে এমনটা উঠে এসেছে।
এফবিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারা হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডে সজীবের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পেয়েছে এবং স্থানীয় মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং লন্ডনে সন্দেহমূলক অর্থ স্থানান্তরের তথ্য পেয়েছে। জয়ের সন্দেহমূলক কার্যকলাপ খতিয়ে দেখতে এফবিআই যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের তদন্তে ওয়াজেদ কনসালটিং ইনকরপোরেটেড নামে একটি কোম্পানির সন্দেহমূলক কার্যক্রমও পাওয়া গেছে, যা বাংলাদেশের সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট প্রকল্পে।
এফবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে মার্কিন বিচার বিভাগের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলসের যোগাযোগ হয়। তিনি বাংলাদেশ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার চুরি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচারসংক্রান্ত একটি মামলায় ওয়াশিংটন ফিল্ডের সহায়তা চেয়েছিলেন। হাসিনা ও সজীব যুক্তরাষ্ট্র ও কেম্যান আইল্যান্ডে অর্থ পাচার করেছেন উল্লেখ করে বলা হয়, বিচার বিভাগের সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ বা মানি লন্ডারিং বিভাগ এসব তহবিল খুঁজে বের করতে, সংযত করতে, জব্দ করতে ওয়াশিংটন ফিল্ডের সহায়তা চেয়েছিল।
এমনকি এফবিআই দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য এবং সুইফট কোড যাচাই করার জন্য সহযোগিতা চেয়েছে এবং সম্ভাব্য অবৈধ কার্যক্রমের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছে। এ ছাড়া তদন্তে ম্যাসাচুসেটস ও ভার্জিনিয়ায় সজীবের স্ত্রী ক্রিস্টিন ও. ওয়াজেদের সঙ্গে সন্দেহমূলক ব্যাংক কার্যক্রমের তথ্যও পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এফবিআই জয়ের দুই সহযোগীর নামও জানিয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্মসম্পাদক নিজাম চৌধুরী। গোয়েন্দা সংস্থাটি ওয়াজেদ কনসাল্টিং, ইকম সিস্টেমস, এমভিয়ন ও ইন্টেলিজেন্ট ট্রেড সিস্টেমস লিমিটেডসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে সজীবের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্নীতি দমন কমিশন হাসিনা, সজীব এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে। দুদকের একটি তদন্ত দল, যার নেতৃত্বে আছেন উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন, বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছেন এবং বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
এদিকে সজীব ওয়াজেদ জয় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দাবি করেছেন, তার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। তারা কখনও কোনো সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা এসব থেকে অর্থ উপার্জন করেননি।
তবে দুই দেশে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কোনো অফশোর অ্যাকাউন্ট নেই। যে পরিমাণ অর্থ দাবি করা হচ্ছে, তা আমরা কেউ কখনও দেখিনি।
সূত্র : নিউ এজ