প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৭ এএম
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪০ এএম
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত
কাজাখস্তানে আজারবাইজান এয়ারলাইনসের বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় রাশিয়ার দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। মনে করা হয়েছে, তাদের ছোড়া মিসাইল হামলায় তা ভেঙে পড়ে। যদিও রাশিয়া সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন খোদ সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইলেন তিনি।
পুতিন বলেন, রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইউক্রেনের ড্রোন প্রতিহত করার সময় ‘মর্মান্তিক এ ঘটনা’ ঘটে। বিভিন্ন খবরে বলা হয়, উড়োজাহাজটি চেচনিয়ায় অবতরণের চেষ্টার সময় রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার হামলার শিকার হয়। তখন উড়োজাহাজটি দিক পরিবর্তন করে কাস্পিয়ান সাগর পার হয়ে আসে।
আজারবাইজান এয়ারলাইনস আগেই দাবি করেছে, বহিরাগত কোনো কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে রাশিয়ার তরফ থেকে ক্ষমা চাওয়া হলো এই ঘটনার জন্য। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ঘটনায় শোকাহত। রাশিয়ার আকাশসীমার মধ্যে বিমান ভেঙে পড়ায় তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
ওই বিমানটি বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনিতে যাচ্ছিল। মাঝপথে কোনো এক কারণে তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। রাশিয়ার দিকে আঙুল তোলা ছাড়াও অনেকে মনে করেছিলেন, পাখির ঝাঁকের সঙ্গে কোনোভাবে ধাক্কা লেগেছিল বিমানটির। তাতেই কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি তৈরি হয়। এ ছাড়া বিমানের ইঞ্জিনেও কোনো সমস্যা থাকতে পারে; যা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল। যদিও এর একটি দাবিরও অকাট্য কোনো প্রমাণ এখনও মেলেনি।
এদিকে রাশিয়া স্পষ্টত বলেছে, বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে তাই আগে থেকে যেন কেউ কিছু কল্পনা না করে ফেলেন। কেউ কেউ এখনই বিষয়টি নিয়ে নানা রকম দাবি করছেন, সেগুলো ঠিক নয়। প্রসঙ্গত, আজারবাইজান প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কাজাখস্তান প্রশাসনও আলাদাভাবে ঘটনার তদন্ত করছে।
বিমানটিতে ৩৭ জন আজারবাইজানের, ১৬ জন রাশিয়ার, ৬ জন কাজাখস্তানের এবং ৩ জন কিরগিস্তানের বাসিন্দা ছিলেন। আকতাউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অন্তত ৩ কিলোমিটার দূরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আন্তর্জাতিক এক সংবাদ সংস্থায় মুখ খুলেছেন উদ্ধার হওয়া কয়েকজন যাত্রী। তারা বলেছেন, আচমকা প্লেনে ঝাঁকুনি হতে শুরু করে। তারা পাইলট কেবিন থেকে তিনবার জোরে আওয়াজও পান, যেন কেউ দরজায় ধাক্কা মারছে! যাত্রীদের ব্যাখ্যায়, মাতাল যেমন হেলেদুলে হাঁটে, ঠিক তেমনি তাদের বিমানটি দুলতে শুরু করেছিল। তারপরই হয় দুর্ঘটনা।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজারবাইজান মনে করে ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের কারণে বিমানটির জিপিএস সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর পর এতে রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম থেকে আসা গুলি বা এ-জাতীয় কিছুর আঘাত লাগে।
আজারবাইজান রাশিয়াকে দায়ী করেনি। তবে দেশটির পরিবহনমন্ত্রী রাশাদ নাবিয়েভ বলেছেন, বিমানটি ‘বাইরের হস্তক্ষেপের’ শিকার এবং অবতরণের সময় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় সবাই (যারা বেঁচে ফিরেছে) বলেছে, বিমানটি যখন গ্রোজনির ওপর ছিল তখন তারা তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে।’
মি. নাবিয়েভ বলেন, তদন্তকারীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন কোনো ধরনের অস্ত্র বা রকেট ব্যবহার করা হয়েছিল।
সূত্র : বিবিসি