প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:০১ পিএম
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩২ পিএম
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। ছবি : সংগৃহীত
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো দেশটির ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দিতে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। দেশটির ফেডারেল পুলিশ সুপ্রিম কোর্টে এর প্রমাণ উপস্থাপন করেছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) পুলিশের ৮৮৪ পৃষ্ঠার এক চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২২ সালের অক্টোবরে লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন বলসোনারো। তবে বলসোনারো কখনও প্রকাশ্যে তার পরাজয় স্বীকার করেননি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট রানিংমেট জেরাল্ডো অ্যালকমিনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়।
লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। লুলা শপথ গ্রহণ করার এক সপ্তাহ পরে বোলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলা চালান, ভাঙচুর করেন।
ওই সহিংসতার ঘটনা নিয়ে পুলিশের প্রায় দুই বছরের তদন্তের ফলাফল হচ্ছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি। সম্প্রতি পুলিশ ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টে প্রতিবেদনটি জমা দেয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে দে মোরায়েস মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।
পুলিশ আর্থিক নথিপত্র ঘেঁটে, তল্লাশি চালিয়ে, ফোনে আড়ি পেতে ও আসামিদের দোষ স্বীকার করে দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে প্রমাণগুলো উপস্থাপন করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বলসোনারো অন্তত ২০১৯ সাল থেকে অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকরীভাবে পরিকল্পনা করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন ও তা বাস্তবায়ন করেছেন। এগুলো গণতান্ত্রিক আইনের শাসন বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে চালানো সমন্বিত কর্মকাণ্ড। যা তিনি প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকার জন্য করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট লুলা ও তার রানিংমেটকে হত্যার পরিকল্পনাটি সম্পর্কে ‘পুরোপুরি অবগত’ ছিলেন বলসোনারো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানচেষ্টায় বলসোনারোর বিরুদ্ধে দায়ের করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগের পক্ষে আটটি প্রমাণ আছে। যার মধ্যে একটি হলো- বলসোনারো ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। বৈঠকে তিনি অভ্যুত্থানের প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেছিলেন। আর তাদেরকে এ ষড়যন্ত্রে যুক্ত হতে বলেছিলেন।
পুলিশের জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী কমান্ডাররা ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ।
তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর তৎকালীন কমান্ডার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) অ্যাডমিরাল আলমির গার্নিয়ার সান্তোস ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছিলেন।
গত সপ্তাহে অভ্যুত্থান পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বলসোনারো ও গার্নিয়ার সান্তোসসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ এনেছে পুলিশ। তাদের বেশির ভাগই অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা। আর তাদের মধ্যে বর্তমানে কর্তব্যরত কিছু সামরিক কর্মকর্তাও রয়েছেন।
কিন্তু বলসোনারো তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এখনো স্বীকার করেন নি।