প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৪০ এএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০৩ এএম
লেবাননের বৈরুত শহরের দক্ষিণে শহরতলি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে তোলা। ছবি : সংগৃহীত
উত্তর গাজার এক হাসপাতালের প্রবেশপথে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামলা করে। এ হামলার পর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগামী দুই দিন সব হাসপাতালের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে।
গাজার ফিল্ড হাসপাতালের ডিরেক্টর মারওয়াল আল হামস জানান, জরুরি এই সময়ে আমরা সব হাসপাতালকে সতর্ক করে দিয়েছি। জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা সব হাসপাতাল বন্ধ রাখা হবে।
গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরও ৭১ জনকে হত্যা ও ১৭৬ জনকে আহত করেছে। এর ফলে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৫৬-তে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে আহত হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ২৬৮ জন। এ ছাড়া সর্বশেষ হামলার পর অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দল তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
সংঘাতের মাঝেই ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছুটা আশার বাণী মিলেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এ খবরে আশার আলো দেখছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দারা। এদেরই একজন আনাস আল-রামলাওয়ি। গাজা উপত্যকার নাসেরপাড়ার এ বাসিন্দা ইতোমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় নিজের বাড়ি হারিয়েছেন।
রামলাওয়ি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘আমার কানে যখন উত্তর গাজার বোমা বিস্ফোরণের শব্দ আসছিল, তখনই পরোয়ানার খবরটি পড়ছিলাম। মনে হলো, অবশেষে যারা এ অপরাধগুলো করছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
এদিকে দেইর আল-বালাহর বাসিন্দা রওয়া শাওয়া আইসিসির এ পরোয়ানাকে প্রতীকী বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে বর্তমানে যখন আমরা প্রতিদিন বেঁচে থাকার লড়াই করছি, তখন এ ধরনের আইনি পদক্ষেপের মূল্য কতটুকু তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’ যদিও এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বাস্তবায়ন এখনও অনেক দূরের বিষয়, তবে এটি গাজার মানুষের জন্য ন্যায়বিচারের এক ক্ষীণ আশা নিয়ে এসেছে। তারা আশা করে একদিন অপরাধীরা তাদের কর্মের জন্য দায়ী হবে।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক্স পোস্টে বলেছেন, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশই এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ওইসব এলাকার মানুষ নিরাপত্তা ও অস্তিত্বহীনতার মধ্যে বসবাস করছে। তিনি বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে মানুষ কঠোর অবরোধের মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধের দুষ্টচক্রে পড়ে তারা জীবন বাঁচাতে ছোটাছুটির মধ্যে রয়েছে। ৪০ দিনের বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলটি মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। অনিরাপদ রুটের কারণে গাজাজুড়ে সামান্য ত্রাণ সরবরাহ করা ক্রমে কঠিন হয়ে পড়ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, উপত্যকায় নাগরিক শৃঙ্খলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
সূত্র : সিনহুয়া