প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:১৩ এএম
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার একেবারে শেষ পর্যায়ে। কাল মঙ্গলবার ভোট। প্রচারের শেষ মুহূর্তে এসে ভোটারদের কাছে ক্লান্তিহীনভাবে ছুটছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুধু ভোটাররা নয়, এ নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন নাকি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই আবার নির্বাচিত হবেন সেটিই দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব। সর্বশেষ ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা বাধিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবারও তেমন কিছু হয় কি না সেদিকেও নজর রয়েছে অনেকের। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে ৭ কোটি ৫০ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছে।
প্রচারের ধারাবাহিকতায় রবিবারও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কমলা ও ট্রাম্পের হাজারো সমর্থকের সামনে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। কমলা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য মিশিগানে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন আর সমর্থকদের নিয়ে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও পেনসিলভানিয়ায় সমাবেশ করবেন ট্রাম্প।
শনিবারও প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন একই অঞ্চলে প্রচারকাজ চালিয়েছেন। একই বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে নিয়ে তার সরকারি উড়োজাহাজ ‘এয়ার ফোর্স টু’ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে তার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের শার্লটে বিমানবন্দর টরমাক ভাগাভাগি করে নেয়।
এদিকে অধিকাংশ জনমত জরিপের ফলাফলে দুই প্রার্থীর জনসমর্থন খুব কাছাকাছি দেখা যাচ্ছে। এতে নির্বাচনে তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের ঘাঁটিতে জরিপে এগিয়ে কমলা
আইওয়ায় ২০১৬ ও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সহজ জয় পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এই অঙ্গরাজ্যে নতুন এক জনমত জরিপে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন কমলা হ্যারিস। আইওয়ার ডেজ মইনেস রেজিস্ট্রার/মিডিয়াকম আইওয়ার পোলের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর এই জরিপ পরিচালিত হয়। মোট ৮০৮ জন ভোটার জরিপে অংশ নেয়। শনিবার জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে কমলা ৪৭ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৪ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।
অথচ সেপ্টেম্বরের জরিপে ট্রাম্প ৪ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন।
জরিপ পরিচালনাকারী পত্রিকা দ্য রেজিস্টার বলেছে, জনমত জরিপে দেখা গেছে নারীরা, বিশেষ করে বয়স্ক ও রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নারীদের ভোট কমলার দিকে গেছে। ট্রাম্প ২০১৬ সালে আইওয়ায় ৯ শতাংশের বেশি পয়েন্ট ব্যবধানে এবং ২০২০ সালে ৮ পয়েন্ট ব্যবধানে জিতেছিলেন।
ভোটগ্রহণ কখন শুরু, কখন শেষ
নির্বাচনের দিন অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে ভোটকেন্দ্রগুলো খুলবে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র একাধিক ‘টাইম জোন’-এ বিভক্ত হওয়ায় দেখা যাবে সময়ের এমন পার্থক্য। একইভাবে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার সময় হবে পৃথক। কখনও তা কাউন্টিভেদেও হবে ভিন্ন।
এদিকে ভোটগ্রহণ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণনার কাজ শুরু হবে। এর কয়েক ঘণ্টা পর থেকে ফলাফল আসতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোট সমান হলে কী হবে
নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই যদি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, অর্থাৎ প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী ২৬৯-২৬৯ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পান কিংবা তৃতীয় কোনো প্রার্থী ইলেকটোরাল ভোট জেতেন, সেক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘প্রতিনিধি পরিষদ’ ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। এটি ‘কন্টিনজেন্ট ইলেকশন’ নামে পরিচিত।
ইলেকটোরাল কলেজ ভোট কত
নির্বাচনে জিততে একজন প্রার্থীকে মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি পেতে হবে। যেসব অঙ্গরাজ্য থেকে ভোটের প্রথম ফলাফল আসতে পারে, সেগুলোর একটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য জর্জিয়া। এরপর রয়েছে নর্থ ক্যারোলাইনা।
সাতটি সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব অঙ্গরাজ্য হলো পেনসিলভানিয়া (১৯ ইলেকটোরাল ভোট), নর্থ ক্যারোলাইনা (১৬), জর্জিয়া (১৬), মিশিগান (১৫), অ্যারিজোনা (১১), উইসকনসিন (১০) ও নেভাদা (৬)। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে মোট ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ৯৩টি।