প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০২ পিএম
গাজায় পশ্চিম তীরের তুলকারেম ক্যাম্পে ধ্বংসস্তূপ সরানোর সময় তোলা। ক্যাম্পের আশপাশের ৭০ শতাংশ সড়ক সংস্কার করা হয়েছে (এক্স)
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, দুদিনের ব্যবধানে ইসরায়েলি
সেনাবাহিনীর অভিযানে গাজা উপত্যকায় অন্তত ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত
হয়েছে। পোলিও টিকা কর্মসূচির জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও বিভিন্ন স্থানে
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিভিন্ন অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩
সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৪০ হাজার ৯৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত
হয়েছে। এই সময়ে আহত হয়েছে ৯৪ হাজার ৬১৬ জন। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে চাপা
পড়ে আছে কয়েক হাজার মানুষ।
গত শুক্রবার গাজার জেনিন শহরে অভিযান শেষে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাফা শহরে নতুন করে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। রাফা শহরের দক্ষিণ-পূর্বে কারেম আবু সালেম ক্রসিংয়ের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে একজন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আলজাজিরা। ফিলিস্তিনের জনসেবা ও আবাসন মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক ভিডিও আপলোড করে। ভিডিওতে দেখা যায়, পশ্চিম তীরের তুলকারেম শরণার্থী শিবিরের ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্যাম্পের ৭০ শতাংশ সড়ক থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়েছে। কিছু রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি মেরামত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এও জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন ক্যাম্প সংস্কারে ব্যস্ত সময় পার করতে হবে। গাজার বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক, ভবন, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ নষ্ট হয়েছে।
শুধু নগর এলাকাই
নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির এক
প্রতিবেদন জানায়, গতকাল শনিবার হেবরনের উত্তর-পশ্চিম এলাকার তায়বেহ গ্রামে বুলডোজার
দিয়ে ফিলিস্তিনের অন্তত ৪৫টি কৃষি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা আয়মান
নিমার হাসান শালালদা জানান, আর্মি গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এসব কৃষিভবনের মালিকদের সেখানে
যাওয়ার পথে বাধা দিচ্ছিল। গতকাল শনিবার তারা সেখানে গিয়ে দেখেন সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে
দেওয়া হয়েছে। আয়মান জানান, তার একটি দোতলা কৃষিভবন ছিল। ভবনের ভেতর নিচতলায় তিনি ফসল
চাষ করতেন। ওপরতলায় থাকার ব্যবস্থা ছিল। এ ছাড়া বহু কষ্টে তিনি পানির ট্যাংক স্থাপন
করেছিলেন। সব ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নেবলুসের দক্ষিণে কায়রুত গ্রামে বানা আমজাদ
বকর নামে তেরো বছর বয়স্ক এক কিশোরীর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। গতকাল শনিবার তার
শেষকৃত্য হয়।
ফিলিস্তিনের এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে যুদ্ধবিরতির বিকল্প নেই। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস জানান, ‘প্রস্তাবনার আরও বিস্তারিত বিবরণ ঘোষণা করা হবে শিগগির। আমরা আগামী কয়েক সপ্তাহেই প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করার বিষয়ে আশাবাদী।’ তিনি এও জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার বিকল্প নেই। তিনি এও জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি স্থাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার সর্বোচ্চ নিয়োগ করেছে। আগামী দিনে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য তারা সব পক্ষের সঙ্গেই কাজ করবে।
সূত্র : আলজাজিরা