× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হানিয়া হত্যাকাণ্ডে যে লাভ হলো নেতানিয়াহুর

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৫৫ পিএম

আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৪ ১৭:০৬ পিএম

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত

ইরানে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া ও লেবাননে হেজবুল্লাহ নেতা ফুয়াদ শুকরের মৃত্যুতে লাভবান হতে পারেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। 

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রাজনৈতিকভাবে সংকটে থাকা নেতানিয়াহুর জন্য তার দেশের জনগণের সমর্থন পুনরুদ্ধারে হামাস ও হিজবুল্লাহর এই দুই শীর্ষ নেতার মৃত্যু সহায়ক হবে। 

গাজায় হামলা চালানোর পর থেকে নিজ দেশের একটি অংশের সমালোচনার মুখে রয়েছেন নেতানিয়াহু। এছাড়া, হামাসের কাছে বন্দি থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের উদ্ধারে ব্যর্থতার জন্যও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে সরব সাধারণ ইসরায়েলিরা। হামাস নেতার মৃত্যুর পর তাদের কাছে বন্দি থাকা জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তির বিষয়টি এখন আরও অনিশ্চিত হয়ে গেছে। 

ইসরায়েলের একটা অংশ গাজা যুদ্ধের জন্য নেতানিয়াহু ও হামাসের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। এজন্য, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য হানিয়া হত্যাকাণ্ডকে ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে । 

ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিশেষজ্ঞ হাগ লোভাট জানিয়েছেন, এটা নিঃসন্দেহে একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা। বর্তমানে অভ্যন্তরীণভাবে অস্থিরতা ও বিভাজনের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল। যে দুইটি ঘটনা নিয়ে ইসরায়েলে এ অস্থিরতা বিরাজ করছে তার প্রথমটি হলো সম্প্রতি বিচার বিভাগের সংস্কার নিয়ে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে বিতর্কিত একটি আইন পাসের পর কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ। আর অন্যটি হলো হামাসের কাছে জিম্মিদের মুক্তিতে সংগঠনটির সঙ্গে যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যর্থতা।  

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজায় হামলা বন্ধে প্রয়োজনীয় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে দেরি করছেন নেতানিয়াহু নিজেই। কারণ, নেতানিয়াহু এখন সংশয়ে আছেন যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে গাজা যুদ্ধ শেষ হবে আর এরপর ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর ডানপন্থী সরকারে ধ্বংস নামতে পারে ও ইসরায়েলে আগামী নির্বাচনের দাবি উঠতে পারে। এজন্য যতক্ষণ না তিনি ইসরায়েলে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারেন ততক্ষণ পর্যন্ত হয়তো গাজায় তার এই গণহত্যা বন্ধ করবেন না । 

লোভাট বলেছেন, হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির অন্যতম প্রচেষ্টাকারী ছিলেন হানিয়া। তিনি নিহত হওয়ায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে ও তা কার্যকর হতে সময় লাগতে পারে। 

একজন ইসরায়েলি অবশ্য মনে করছেন- নেতানিয়াহু যা করছেন তা তার নিজের জন্য করছেন ও তার এই বিলম্বের কারণেই করুণ পরিণতির শিকার হচ্ছেন হামাসের কাছে জিম্মি ইসরায়েলিরা। 

ফিলিস্তিনের বন্দিদের ওপর নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো অভিযোগের জবাবে সম্প্রতি ইসরায়েলের আইনসভা নেসেটের সদস্য ও মন্ত্রীসহ ডানপন্থীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। নির্যাতনের ওই ঘটনায় ৯ ইসরায়েলি সেনাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ইসরায়েলের নাকাব মরুভূমির এসডি টেইমান বন্দিশিবিরে গাজা থেকে গ্রেপ্তার করা ফিলিস্তিনিদের বিনা অভিযোগে বন্দি রাখা হয়েছে। টেইমান বন্দিশিবিরকে তুলনা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ান্তানামো কারাগারের সঙ্গে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ইসরায়েলিরা তাণ্ডব চালিয়েছেন টেইমান বন্দিশালায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বন্দিশিবিরে ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনে ১৩ জন ফিলিস্তিনি বন্দির মৃত্যু হয়েছে। 

বিশ্লেষণে দাবি করা হচ্ছে, হানিয়ার মৃত্যুতে সাম্প্রতিক এসব বিতর্কিত ঘটনা থেকে সমালোচনা মুক্ত হতে পারেন নেতানিয়াহু। 

২৭ জুলাই ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে ফুটবল খেলার সময় রকেট হামলায় ১২ শিশু ও তরুণ নিহত হয়। এ হামলার জন্য লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে ইসরায়েল। এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় ৩০ জুলাই লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এতে হিজবুল্লাহ নেতা শুকর নিহত হন। কিন্তু হিজবুল্লাহ দৃঢ়ভাবে ফুটবল মাঠে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।  

হিজবুল্লাহ নেতা নিহত হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে হানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। হানিয়ার মৃত্যুর একদিন পরই ইসরায়েল দাবি করে, ১৩ জুলাই গাজায় একটি হামলায় তারা হত্যা করেছে হামাসের সামরিক শাখা কাশেম বিগ্রেডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মোহাম্মদ দেইফকে। দেইফ অনেকদিন ইসরায়েলের সন্ধানী তালিকার শীর্ষে ছিলেন। 

লোভাট মনে করেন, গাজায় হামলা নিয়ে চলমান নানা অভিযোগ ও উৎকণ্ঠা সত্ত্বেও হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে পারাটা ও হিজবুল্লাহকে আঘাত করতে পারাটা ইসরায়েলের জন্য সাফল্য হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। 

অনেকে ইসরায়েলি নাগরিক হামাস ও হিজবুল্লাহর-দুই নেতার হত্যাকে শত্রুদের বিরুদ্ধে জয় হিসেবে দেখছেন। যদিও ইসরায়েল আগেই ধারণা করেছে, এসব ঘটনায় ইরানের মতো হামাস ও হিজবুল্লাহর অন্যান্য মিত্র দেশ থেকে হামলার আশঙ্কা থাকতে পারে।

এদিকে, ইরানে হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সরাসরি ইসরায়েলে হামলা করার ঘোষণা দিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। 

শনিবার (৩ আগস্ট) পেন্টাগনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইরান ও তার সমর্থকদের সম্ভাব্য হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করবে। 

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গাজায় ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে। এতে এখন অবধি ৩৯ হাজার ৪৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলার ফলে ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির অধিকাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। 

সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা  

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা