গত মঙ্গলবার এফবিআইয়ের তদন্তকারীরা র্যালির মঞ্চে অবস্থান নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। ম্যাথিউ কীভাবে ছাদ থেকে ক্লিয়ার শট পেয়েছেন তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে তদন্তকারী দল
মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের একটি ছেলে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কেন গুলি করলেনÑ তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। এফবিআই এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং তদন্তের দৃশ্যমান অগ্রগতিও হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই ম্যাথিউর মোটিভ খুঁজে পাচ্ছে না। এফবিআই এখন পর্যন্ত ১০০-এরও বেশি ইন্টারভিউ নিয়েছে। গতকাল এফবিআই সংবাদমাধ্যমে তদন্তকার্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। ওইদিন এফবিআই-এর তদন্তকারীরা হামলাকারী ম্যাথিউর বাড়ি ও গাড়িতে তল্লাশি চালায় এবং তার সেলফোনের তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু তদন্তে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। ম্যাথিউ কোথাও ট্রাম্পকে হামলার কোনো উদ্দেশ্য প্রকাশ করেছেÑ এমনটি পাওয়া যায়নি।
থমাস ম্যাথিউ ক্রুকসের ব্যবহৃত সেলফোনটি ভার্জিনিয়ার
কোয়ান্টিকোতে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তৃতীয় একটি পক্ষ অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা
বাড়ানোর জন্য ম্যাথিউকে প্ররোচিত বা ব্রেনওয়াশ করেছে। তবে সেলফোনেই হামলার মোটিভ রয়েছেÑ
এমন কোনো তথ্য এফবিআই নিশ্চিত করেনি। ম্যাথিউর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দুটো বিস্ফোরক
যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এই যন্ত্রগুলোর কোনো বৈধ লাইসেন্সে নেই। দ্য বুলেটিনের এক
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত কয়েক মাসে ম্যাথিউর কাছে একাধিক প্যাকেজ এসেছে। এসব প্যাকেজে
ঝুঁকিপূর্ণ দ্রব্য ছিল বলে শিপিং প্যাকেজের তথ্য বলছে।’ বুলেটিনের প্রতিবেদনে এও বলা
হয়েছে, হামলার দিন ম্যাথিউ ৫০ রাউন্ড গুলি নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে এতগুলো গুলি তিনি কোথা
থেকে সংগ্রহ করেছেন তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে এফবিআই জানিয়েছে, ম্যাথিউ অনলাইন থেকে
গুলি আগেই কিনে রেখেছিলেন।
এবিসি নিউজ ভিন্ন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের
ওপর হামলার দিন ম্যাথিউ বাবার কাছে বন্দুক ধার চেয়েছিলেন। তিনি জানান, তিনি বেথেল পার্কের
শুটিং ক্লাবে লং রেঞ্জ শুট প্র্যাকটিস করবেন। বাবার কাছে তিনি এআর-১৫ স্টাইলের রাইফেল
ধার নিয়েছিলেন।
পিটসবার্গের বিভিন্ন বন্দুকের দোকানে আইনি সংস্থাগুলো
অভিযান চালাচ্ছে। এখনও ম্যাথিউ কোনো গুলি কিনেছেনÑ এমন তথ্য মেলেনি। শুধু তাই নয়, ম্যাথিউকে
এই হামলায় আদৌ কেউ প্ররোচিত করেছে কি-না তাও জানা সম্ভব হয়নি। গত রবিবার প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেনও জানিয়েছেন, ‘হামলাকারী কেন হামলা করেছে তা আমরা জানি না। আইন সংস্থাগুলোও
হত্যাচেষ্টার মোটিভ খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছে।’
এফবিআই হামলার কারণ খুঁঝে বের করতে না পারলেও
কীভাবে হামলা হয়েছে তার একটি আনুমানিক স্পষ্ট ধারণা বের করার চেষ্টা করছে। এজন্য প্রতিনিয়ত
হামলাস্থলে তদন্তকারীরা যাচ্ছেন। অনেকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। সামান্য কোনো লিড
পেলেই তদন্তকার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যাথিউ
গুলি করার আগে কী কিী করেছিলেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত
গোয়েন্দাদের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, টমাস
যে বহুতল থেকে আক্রমণ চালিয়েছিলেন, সেখানে উঠতে ওই মই ব্যবহার
করেছিলেন। ছাদে ম্যাথিউর অবস্থান লক্ষ করে র্যালির একজন সিক্রেট সার্ভিসের
অফিসারকে সতর্ক করেন। বাটলার পুলিশের এক কর্মকর্তা দ্রুত ছাদে ম্যাথিউকে আটকের চেষ্টা
করেন। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাথিউ মারা গেছেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, গুলি ছোড়ার সময় তিনি জাম্বোট্রনের দিকে আচমকা না তাকালে সেদিন
মারা যেতেন। এফবিআই জানিয়েছে, এখন তদন্তের প্রাথমিক পর্যায় চলছে। তাই এখনই হামলাকারীর
আদর্শ বা মতাদর্শিক অবস্থান জানা সম্ভব নয়। আপাতত ম্যাথিউ কীভাবে একটি ক্লিয়ার শট পেয়েছেন
তা খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। কেউ ম্যাথিউকে সহযোগিতা করেছেন কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।