প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৪ ২১:০৩ পিএম
ইসরায়েলি সেনারা এখনও গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল গাজার খান ইউনিসে বিমান হামলায় আরও ২১ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। এ দিন সংবাদমাধ্যমে গাজার অবকাঠামোগত অবস্থার করুণ চিত্র প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও। ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলায় গাজায় চার কোটি টন কংক্রিট আর ইস্পাতের ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি হলে প্রথমে এই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করতে হবে। সে কাজে ১৫ বছরেরও বেশি সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বহুজাগতিক সংস্থাটি। ইউএনইপি হিসাব করে বলেছে, ২০০৮ সাল থেকে গাজায় নানা যুদ্ধে যে পরিমাণ ধ্বংসাবশেষের সৃষ্টি হয়েছিল, এবারের যুদ্ধে ওইসব ধ্বংসাবশেষের চেয়ে ১৩ গুণ বেশি জঞ্জালের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচি (ইউএনইপি) এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ত্রাণ ও কর্মসংস্থানবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) নয় মাসের যুদ্ধ
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জানায়, চার কোটি টনের ওই ধ্বংসাবশেষের
তলায় অবিস্ফোরিত বোমাসহ নানা
ক্ষতিকর পদার্থও মজুদ রয়েছে। গত মাসে ইসরায়েলের সামরিক রেডিওতে সেনা কর্মকর্তাদের
বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল, গত বছর ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৫০ হাজার বোমা নিক্ষেপ করেছে। ওই বোমাগুলোর
মধ্যে দুই থেকে তিন হাজার বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ধ্বংসস্তূপে ঠিক কতটা প্রাণঘাতী
রসদ রয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে ফিলিস্তিনিদের জন্য অধিকাংশই প্রাণঘাতী হতে পারে বলে
আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার ধ্বংসস্তূপ নিরাপদে সরানোর জন্য অন্তত ৫০ কোটি ডলার প্রয়োজন
হবে বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪
সালে গাজায় ইসরায়েলি হামলার পরে প্রায় ২৪ লাখ টন
ধ্বংসাবশেষ সরাতে হয়েছিল। নয় মাসের এই যুদ্ধ শেষে এই সংখ্যা যে আরও বেশি হবে
তা বলাই বাহুল্য।
ইউএনডিপির আরব দেশগুলোর আঞ্চলিক ব্যুরোর পরিচালক আবদুল্লাহ
আল-দারদারি
আলজাজিরাকে দেওয়া
এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘গত প্রায় ৪০ বছরে গাজায় মানব
উন্নয়নের জন্য যত বিনিয়োগ করা হয়েছিল, তার সবই জলে ভেসে গেছে...আমরা
বলতে গেলে ১৯৮০-এর দশকে ফিরে গেছি।’
গাজার ধ্বংসাবশেষ সরাতে শতাধিক ট্রাক এবং ৫০ কোটি মার্কিন
ডলারের বেশি অর্থ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইউএনইপি
বলেছে,
কিছু ধ্বংসাবশেষের ভেতর মারাত্মক বিষাক্ত খনিজ অ্যাসবেস্টস
রয়েছে, যা ক্যানসারসহ ফুসফুসের নানা রোগের সৃষ্টি করে। হামলায় ধসে পড়া ভবনগুলোর
পাহাড়সমান ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মরদেহ চাপা পড়ে আছে। সেগুলো পচে-গলে নানা দূষণ
ছড়াচ্ছে।
গত মে মাসে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) থেকে দেওয়া
এক পরিসংখ্যানে বলা হয়,
গাজায় যুদ্ধে ধ্বংস হওয়া বাড়িগুলো বিনির্মাণ করতে ২০৪০ সাল
লেগে যাবে। খরচ হবে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। সূত্র
: আলজাজিরা