প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১৭:১৬ পিএম
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১৭:২৫ পিএম
ইমরান খান ও বুশরা বিবি
অবৈধ বিয়ের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ইমরান খান ও স্ত্রী বুশরা বিবির কারাদণ্ড দেয়া হয়। আজ (১৩ জুলাই) পাকিস্তানের ইসলামাবাদের এক সেশন আদালতে
ইমরান খানের বেকসুর খালাসের আবেদন গ্রহন করা হয়। এই মামলায় বেকসুর খালাসের পর ইমরান
খান এখন পুরোপুরি মুক্ত। অর্থাৎ ইমরান খানের ওপর চলমান সর্বশেষ কেসটির ইস্ততাও হয়ে
গেছে। চলতি বছর ৩ ফেব্রুয়ারি এই দম্পতির ওপর অবৈধ বিয়ের মামলা করা হয়। ইমরান খানের
স্ত্রী বুশরা বিবির সাবেক স্বামী খায়ের ফরিদ মানেকা এই মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন,
ইদ্দতের সময় পার হওয়ার আগেই দুজন কন্ট্রাক্ট ম্যারিজ করেন।
জ্যেষ্ঠ্য
সিভিল জজ এবং সেশন জজ শাহরুক আরজুমান্দ এই কেসের শুনানির দায়িত্ব ছিলেন এবং মামলার
রায় ঘোষণা মে মাস পর্যন্ত স্থগিত রাখেন। তবে রায় ঘোষণার আগে তিনি মামলাটি এডিএসজি মাজোকাকে
দিয়ে দেন। গত মাসে মাজোকা এই দম্পতির জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। অতিরিক্ত জেলা ও
দায়রা জজ আফজাল মাজোকা অবশেষে গত শনিবার বিকেল তিনটায় মামলার রায় ঘোষণার কথা জানান।
তাদের আবেদন গ্রহন করে তিনি রায় ঘোষণার সময় বলেন, ‘এই দুজনকে
যদি অন্য কোনো কেসে আর প্রয়োজন না হয় তাহলে ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে অবিলম্বে মুক্তি
দেয়ার আদেশ দেয়া হচ্ছে’।
রায় ঘোষণার আগে মানেকা বুশরা বিবির ওপর মেডিকেল চেকাপের নির্দেশ দেন। এমনকি তার মাসিক চক্রের পরীক্ষা করারও নির্দেশ দেন যাতে ইদ্দতের সঠিক সময় নির্ধারণ করা যায়। এজন্য বেশ কজন ইসলামিক স্কলার ও ওলামাকেও নিয়োগ দেয়া হয়। বিচারক দুজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করে শীঘ্রই তাদের মুক্তির নির্দেশ দেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, অন্য কোনো কেস তাদের ওপর না থাকায় এই আদেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ জেল খাটার জন্য সর্বশেষ মামলা থেকেও মুক্তি পেয়ে গেলেন পিটিআই-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান।
এই রায়ের পর ইমরান খানের ওপর সব মামলাই উঠে গেলো। পিটিআই-এর
চেয়ারম্যান গোহার খান এই রায়ের পর মন্তব্য করেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ তাদের
স্বাধীনতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে’। তিনি সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘ইমরান খান এবং বিবির সঙ্গে
আদিয়ালাতে দেখা হয়েছে। দুজনেই খুশি গতকালের সিদ্ধান্তে।’ তিনি মূলত সংরক্ষিত
আসনে পিটিআই-এর অনুমোদনের কথা বলছিলেন। তিনি যুক্ত করেন, ‘আজকের রায়ে আমরা আরেকটি জয়
পেয়েছি। পুরো বিশ্ব আজ জানতে পেরেছে আমরা রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার।‘
আজকের বিচারকার্যে ইমরান খানের আইনজীবিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন
করেন এবং জানান বুশরা বিবির সাবেক স্বামী হানাফি মজহাবের অনুসারি। ফলে বুশরা বিবির
সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর এমন অভিযোগ উত্থাপনের অধিকার তার আইনত নেই। তবে বুশরার সাবেক
স্বামীর উকিলরা জানান, ইমরান খান তার স্ত্রীর ওপর অভিযোগ চাপিয়ে নিজে পার পেতে চাচ্ছেন।
কিন্তু বিচারক জানান, দুজনই যেহেতু সম্মতিতে বিয়ে করেছে তাই এখানে একজনের ওপর দোষ চাপানোর
সুযোগ নেই। ইমরান খানের কাউন্সেল সালমান আকরাম রাজা যুক্তি দেন, মুসলিম পরিবার আইন
অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুসারে, ৯০ দিনের ইদ্দতের হিসেবটি করে লাভ নেই। কারণ মানেকা ডিভোর্স
পেপার পাঠাননি। মৌখিক তালাকের ভিত্তিতে এমন কোনো দাবি আইনত বৈধ নয় এমন দাবি করেন ইমরান
খানের পক্ষের উকিল।
সূত্র: দ্য ডন
আরও
আসছে…